সামনে দ্বাদশ নির্বাচন। কিন্তু রংপুরে জেলা ও মাহানগর আওয়ামী লীগ, বিএনপি জেলা-মহানগর ও জেলা জাতীয় পার্টি চলছে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে। এই তিন দলেই কবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে তা জানেন না দলের সাধারণ নেতা-কর্মীরা। তবে দলের নেতারা বলেছেন, খুব দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে দলের গতিশীলতা আরও বাড়ানো হবে। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বরে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেরে যাওয়ার পরে নেতা-কর্মীদের মাঝে নানান প্রশ্ন দেখা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্র থেকে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত করে আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়কের নাম ঘোষণা করা হয়। পরে ১১ ফেব্রুয়ারি ১০১ সদস্যের জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি বিলুপ্ত করে আহ্বায়ক কমিটি করায় দলের নেতা-কর্মীদের অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায়। তবে নেতা-কর্মীদের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে কতদিন আহ্বায়ক কমিটি থাকবে। কবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। দলের একাধিক সূত্র দাবি করেছেন, নির্বাচনের আগে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা না গেলে দলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। ইতোমধ্যে কাউনিয়া ও মিঠাপুকুর উপজেলায় বিভক্তি প্রকাশ্যে এসেছে। এ নিয়ে দলের হাইকমান্ড খুশি নয়। সূত্রমতে বিভক্তি মিটাতে দলের একাধিক নেতাকে কেন্দ্রে তলব করে দলীয় ঐক্যের বিষয়ে তাগিদ দেওয়া হয়। এদিকে গত বছরের এপ্রিলে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে একই সঙ্গে জেলা ও মহানগরের নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মতো বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে কবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। বিএনপির নেতা-কর্মীরা দলের গতি আনতে চাচ্ছেন, খুব দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হউক। বর্তমানে বিএনপির উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। ওইসব কমিটি নিয়েও অসন্তোষ রয়েছে দলের মধ্যে। দলের একাধিক নেতা-কর্মী এমনটাই জানিয়েছেন। এদিকে মহানগর জাতীয় পার্টির পূর্ণাঙ্গ কমিটি থাকলেও জেলা কমিটি চলছে আহ্বায়ক দিয়ে। জেলা কমিটির সভাপতি ছিলেন দলের বহিষ্কৃত নেতা সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা। রাঙ্গাকে দল থেকে বহিষ্কারের পর জেলা কমিটি বিলুপ্ত করে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। রংপুর জাতীয় পার্টির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত হলেও দীর্ঘদিন থেকে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে দল চলায় আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনে দল যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারবে কি না এ নিয়ে নেতা-কর্মীদের মাঝে সংশয় দেখা দিয়েছে। জাপার একাধিক নেতা-কর্মী বলেন, রংপুর জেলা জাপার আহ্বায়ক আবুল মকসুদ চৌধুরী নান্টুর মৃত্যুর পরে এখনো ওই পদ কাউকে দেওয়া হয়নি। ফলে আহ্বায়ক ছাড়াই চলছে জেলা জাপার কার্যক্রম। তবে তিন দলের নেতারা আশা প্রকাশ করে বলেন, খুব দ্রুত সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এ কে এম ছায়াদত হোসেন বকুল বলেন, আমরা দলকে সুসংগঠিত করেছি। কেন্দ্রের নির্দেশ পেলেই সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হবে। আমাদের মাঝে কোনো বিভেদ নেই। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামছুজ্জামান সামু বলেন, সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হবে। নগরীর ৩৩ ওয়ার্ড কমিটি গঠনের কাজ চলছে। বিএনপি আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব হাজি আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমরা আগের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। খুব দ্রুত সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হবে। দ্বাদশ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে।