এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নরসিংদীর দুর্গম চরাঞ্চলে দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় চারজন গুলিবিদ্ধসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ভোরে সদর উপজেলার মেঘনা নদী বেষ্টিত আলোকবালী ইউনিয়নের খোদাদিলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের জেলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গুলিবিদ্ধরা হলেন- আল আমিন (৩০), সাকিব সরকার (২৪), নাহিদ সরকার (২২) ও শফিউল্লাহ (৩৫)। টেঁটাবিদ্ধসহ আহতরা হলেন- হালিম মিয়া (৫০), মাসুদ রানা (২৪), হারুন মিয়া (২০), নাজমুল ইসলামসহ (২০) আরও দুজন। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ আল আমিনকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তারা সবাই আলোকবালীর খোদাদিলা গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় শটগানসহ আল আমিন (৩০) ও নাজমুল ইসলাম (২০) নামে দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বজলুর রহমান ফাহিম ও যুবলীগের নেতা জাকির হোসেনের সঙ্গে একই ইউনিয়নের বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক জয়নাল আবেদিনের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্বের জের ধরে উভয় গ্রুপের মধ্যে মামলা পাল্টা মামলা হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুবলীগ নেতা জাকির হোসেন এলাকা ছাড়া হয়ে পড়েন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ভোর রাতে জাকির হোসেন ও ফাহিমের সমর্থকরা বাঁশগাড়ী ও নিলক্ষার থেকে লোকজন নিয়ে এলাকায় ঢুকে। এ খবর জয়নাল আবেদিন গ্রুপের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তারা তাদের প্রতিহত করার প্রস্তুতি নেয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। প্রতিপক্ষের ছোড়া গুলিতে আল আমিনসহ চারজন গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হন। শটগানসহ গ্রামবাসীর হাতে আটক নাজমুল ইসলাম পুলিশকে জানান, ৫ লাখ টাকা চুক্তির ভিত্তিতে অস্ত্রসহ তাদের তিনজনকে নিলক্ষা গ্রাম থেকে নিয়ে আসা হয়েছে।
জয়নাল আবেদিন জানান, মামলায় আসামি জাকির এলাকা ছাড়া। হঠাৎ ফজরের নামাজের পর জাকির ও ফাহিমের নেতৃত্বে বাঁশগাড়ী ও নিলক্ষার অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে এলাকায় ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ শুরু করে। পরে গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে ঘেরাও দিয়ে অস্ত্রসহ নাজমুল নামে একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
এ বিষয়ে অপর পক্ষের নেতা জাকির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বুধবার আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ ছিল। সেখানে তাদের লোকজন যাওয়ায় জয়নাল ও তার ভাইয়েরা ওই লোকজনকে মারধর করে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে জয়নাল লোকজন নিয়ে তার ও তার সমর্থকদের বাড়ি ঘরে হামলা চালায়। ৫ লাখ টাকায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ভাড়া আনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এগুলো মিথ্যা অভিযোগ।
নরসিংদী সদর থানার উপপরিদর্শক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শটগানসহ দুজনকে আটক করেছে।