ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইস্যুতে বিভিন্ন দেশের ১৬০ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, নোবেল বিজয়ী ব্যক্তি এবং কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিকের খোলা চিঠিকে ‘দেশের বিচারব্যবস্থা ও সার্বভৌমত্বের ওপর অনাকাক্সিক্ষত হস্তক্ষেপ’ আখ্যা দিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল। একে ‘আন্তর্জাতিক আইন, রীতিনীতি ও শিষ্টাচারবিবর্জিত’ উল্লেখ করে বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এই বিবৃতিতে নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, যুগ্ম-আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আমজাদ আলী খান ও অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষর করেছেন। এছাড়াও নীল দলের ৮৬৬ জন শিক্ষকের নাম যুক্ত করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের স্বার্থরক্ষার্থে দেওয়া বিবৃতিটিতে বাংলাদেশে মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের ওপর আক্রমণ চলছে বলে যে দাবি করা হয়েছে তা অমূলক ও ভিত্তিহীন।
বিবৃতিতে ড. ইউনূসের ব্যাপারে চিঠিদাতাদের অবস্থান ‘পক্ষপাতমূলক’ বলে উল্লেখ করা হয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদাহরণ টেনে এতে বলা হয়, অতি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্পও গ্রেফতার হয়ে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। এ থেকে প্রতীয়মান হয়, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। বিবৃতিদাতারাও নিজ নিজ দেশের আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও নীতিনিষ্ঠ নাগরিক হিসেবে পরিচিত। অথচ বাংলাদেশের বিষয়ে তাদের অবস্থান আইনের শাসন, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের ব্যাপারে বৈপরীত্য নির্দেশ করে। তাদের ওই চিঠির মধ্য দিয়ে চলমান বিচারিক কার্যক্রম প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে এবং ন্যায়বিচারকে ব্যাহত করবে বলেও বিবৃতিতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা বিচারাধীন। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদে ৬০ বছরে অবসরে যাওয়ার আইন অমান্য করে ৭০ বছর বয়সেও উক্ত পদ ছাড়তে সম্মত ছিলেন না। এ সংক্রান্ত মামলায় তিনি বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আইনি লড়াইয়ে হেরে যাওয়ার পরে গ্রামীণ ব্যাংকের পদ ফিরে পেতে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রভাবশালী দেশে লবিং করেছেন। এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকি, দাতা তহবিলের অর্থ বেআইনিভাবে হস্তান্তর, শ্রম আইন লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা ধরনের অভিযোগ আছে। অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা কর ফাঁকির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে এবং তিনি আদালতের রায় মেনে নিয়ে ধার্যকৃত কর পরিশোধ করেছেন।