বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেছেন, রপ্তানির বিপরীতে প্রণোদনা কমানোর ফলে বস্ত্রশিল্প মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়বে। এমনকি ব্যাপক সম্ভাবনাময় এ শিল্পটি ভবিষ্যতে দেশের পাটশিল্পের মতো বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। এ রকম পরিস্থিতিতে বস্ত্রখাতের সুরক্ষায় কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না করেই প্রণোদনা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া সুচিন্তিত নয়।
গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিটিএমএ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিটিএমএর সহসভাপতি ফজলুল হক ও ফায়জুর রহমান। বিটিএমএর পক্ষ থেকে জানানো হয়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বস্ত্র (টেক্সটাইল) ও তৈরি পোশাক শিল্প খাতে রপ্তানির বিপরীতে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কোনো ধরনের বিকল্প না রেখে এভাবে নগদ সহায়তা কমানোয় দেশের বস্ত্র খাতের সক্ষমতা কমবে। নানাবিধ সংকটের কারণে ইতোমধ্যে বেশকিছু কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। আরও অনেক কারখানা যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ অবস্থায় অবিলম্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা সার্কুলার বা প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করে নগদ প্রণোদনা আগের অবস্থায় নেওয়ার দাবি জানায় বিটিএমএ। একই সঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে বস্ত্রশিল্পের জন্য একটি যুগোপযোগী ‘টেক্সটাইল পলিসি’ নামে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন এবং ব্যাংকঋণ পরিশোধের জন্য এক বছরের গ্রেস পিরিয়ড প্রদানের দাবি জানায় সংগঠনটি।
বিটিএমএ সভাপতি বলেন, প্রতি অর্থবছরে বস্ত্র ও পোশাক খাতে রপ্তানির বিপরীতে মাত্র ৮ হাজার কোটি টাকা নগদ প্রণোদনা দেয় সরকার। এটি দেশের প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার জাতীয় বাজেটের তুলনাই খুবই সামান্য। এর বিপরীতে বিপুল পরিমাণ রপ্তানি আয়ে অবদান রাখছে বস্ত্র ও পোশাক খাত। কিন্তু সম্প্রতি বস্ত্র ও তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানির বিপরীতে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা ব্যাপকভাবে কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এটা বাস্তবায়িত হলে তা এ দুটি খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বিটিএমএ সভাপতি আরও জানান, ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের কথা বলে নগদ সহায়তা কমানো হয়েছে বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন। তবে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের এখনো প্রায় আড়াই বছর বাকি। আর এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন হলেও গ্রেস পিরিয়ড হিসেবে ২০২৯ সাল পর্যন্ত শিল্প খাতগুলো নগদ প্রণোদনা পেতে পারে। ২০০৪ সালে প্রতিবেশী ভারতের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন হলেও দেশটি এখনো বস্ত্র খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নগদ সহায়তার বিকল্প হিসেবে বিভিন্ন নীতি সহায়তা ও প্রণোদনা দিচ্ছে।