১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল করেছে সরকার। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে এ সুযোগ দিয়েছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ১৫ শতাংশ আয়কর পরিশোধ করে নগদ অর্থসহ অপ্রদর্শিত সমজাতীয় পরিসম্পদ প্রদর্শনের বিশেষ ব্যবস্থাসংক্রান্ত বিধান বিলুপ্ত করা হয়েছে। ১৫ শতাংশ হারে আয়কর পরিশোধ করে অপ্রদর্শিত পরিসম্পদ প্রদর্শন করার বিধান অর্থ আইন ২০২৪-এর মাধ্যমে সংযোজন করা হয়েছিল। একজন নিয়মিত করদাতাকে যেখানে তার আয়ের ওপর সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত আয়কর দিতে হয় এবং একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে প্রদেয় করের ওপর আরও সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ হারে সারচার্জ দিতে হয় বিধায় মাত্র ১৫ শতাংশ কর প্রদান সাপেক্ষে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া একটি ন্যায়নিষ্ঠ সমতাভিত্তিক করব্যবস্থার জন্য বৈষম্যমূলক।
এ অবস্থায় একটি ন্যায়নিষ্ঠ সমতাভিত্তিক রাজস্বব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ১৫ শতাংশ আয়কর পরিশোধ করে নগদ অর্থসহ অপ্রদর্শিত সমজাতীয় পরিসম্পদ প্রদর্শনের বিশেষ ব্যবস্থাসংক্রান্ত বিধান বিলুপ্ত করা হলো। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একটি সত্যিকারের বৈষম্যমুক্ত, ন্যায়ানুগ ও প্রগতিশীল করব্যবস্থা গড়ে তুলতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
এনবিআরসূত্র জানান, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১১ হাজার ৮৩৯ জন প্রায় ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বৈধ করেছিলেন, যা এক বছরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এনবিআর ওই অর্থ থেকে ২ হাজার ৬৪ কোটি টাকা রাজস্ব পেয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর কালো টাকা সাদা করার বিতর্কিত সুযোগটি বাতিলের উপায় খুঁজছিল। নতুন সরকার গঠনের পর ২৮ আগস্ট রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় কালো টাকা সাদা করার বিধান বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে ২৭ আগস্ট রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর সদর দপ্তরে বর্তমান সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠকে এনবিআর কর্মকর্তারা কালো টাকা সাদা করার সুবিধা বাতিলের সুপারিশ করেছিলেন।