রংপুরে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি প্রতিষ্ঠান চলছে অভিভাবক ছাড়া। এগুলো হচ্ছে রংপুর সিটি করপোরেশন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধান না থাকায় প্রশাসনিক কাজকর্মে নেমে এসেছে স্থবিরতা। ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। এরপর রংপুর সিটি করপোরেশনসহ দেশের সব সিটি করপোরেশন থেকে মেয়রদের অপসারণ করে সরকার। মেয়রের অবর্তমানে সরকারি নির্দেশে প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন রংপুরে বিভাগীয় কমিশনার মো. জাকির হোসেন। গত সপ্তাহে বিভাগীয় কমিশনারকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। ফলে সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের পদটি শূন্য হয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠাটির প্রধান না থাকায় বিল-ভাউচারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফাইল সই জটিলতায় আটকে রয়েছে। এ ছাড়া ২০৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের সিটির ৩৩টি ওয়ার্ডে সাধারণ ও সংরক্ষিত মিলে ৪৪ জন কাউন্সিলর রয়েছে। এর মধ্যে মামলাজনিত কারণে ৮-১০ কাউন্সিলর আত্মগোপনে রয়েছেন। ফলে ওইসব ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলদের। এতে তারা দায়িত্ব পালনে হিমশিম খাচ্ছেন।
এদিকে রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া না হলে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শনিবার তারা এক মানববন্ধনে এ হুঁশিয়ারি দেন। প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর, ট্রেজারারসহ ৪০ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে পদত্যাগ করানো হয়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় অভিভাবকশূন্য হয়ে আছে। বর্তমানে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে এলেও তাদের কোনো কাজকর্ম নেই।
এ ছাড়া রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বদলি হওয়ার এক মাস পেরিয়ে গেছে। নতুন একজন পরিচালককে নিয়োগ দেওয়া হলেও ২৫ দিন পেরিয়ে গেছে, কিন্তু তিনি কর্মস্থলে যোগ দেননি। ফলে এই হাসপাতালটিও অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে চেইন অব কমান্ড। ব্যাহত হচ্ছে দাপ্তরিক কাজকর্ম।
গত ১২ আগস্ট রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইউনুস আলী ও সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. মজিদুল ইসলামকে বদলি করা হয়। একই সঙ্গে এই দুই কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। তাদের বদলি করার পরে হাসপাতালটি মূলত অভিভাবক হয়ে পড়ে। ফলে হাসপাতালের সার্বিক কাজকর্ম বিঘ্নিত হচ্ছে।