বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) নির্বাহী কমিটির সভায় ‘নো ওয়েজ বোর্ড নো মিডিয়া’ নীতি কার্যকর করাসহ ২১ দফা দাবিতে আগামী ১ নভেম্বর দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য দাবির মধ্যে রয়েছে সাংবাদিকদের সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার টাকা নির্ধারণ; প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার জন্য নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন ও দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন; সাংবাদিক সুরক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন; সাংবাদিকদের সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন নির্ধারণ; সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিসহ সব সাংবাদিক হত্যার বিচার; গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী সব কালা কানুন বাতিল; সাংবাদিকদের ন্যায্য পাওনা আদায়ের জন্য পৃথক শ্রম আদালত স্থাপন ইত্যাদি। গতকাল সকালে কক্সবাজারে বিএফইউজে নির্বাহী পরিষদের সভায় এসব দাবি জানানো হয়। বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীনের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরীর পরিচালনায় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন বিএফইউজে সহসভাপতি এ কে এম মহসিন, সহকারী মহাসচিব বাছির জামাল, ড. সাদিকুল ইসলাম স্বপন ও এহতেশামুল হক শাওন, সাংগঠনিক সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ, কোষাধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক মো. আবু বকর, প্রচার সম্পাদক শাজাহান সাজু, নির্বাহী সদস্য শাহীন হাসনাত, অপর্ণা রায়, মো. আবু হানিফ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজারের সভাপতি নুরুল ইসলাম হেলালী ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাফর প্রমুখ।
সভায় সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন, অনলাইন এমনকি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর জন্য একটি সমন্বিত জাতীয় গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়ে বলা হয়, এই সমন্বিত নীতিমালার আওতায় প্রতিটি ভিন্ন গণমাধ্যমের জন্য ভিন্ন নীতিমালা থাকবে। অনেক নীতিমালা প্রণয়ন না করে একটি পূর্ণাঙ্গ ও সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়ন করা হলে সেটি প্রয়োগ করা ও মেনে চলা সহজ হবে। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত গণমাধ্যমের জন্য ৫০টি আইন, নীতিমালা ও বিধিবিধান রয়েছে যা বিশ্বের কোথাও নেই। অথচ এ দেশে এখনো একটি পূর্ণাঙ্গ ও সমন্বিত গণমাধ্যম নীতিমালা করা যায়নি। এক প্রস্তাবে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকদের জন্য নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের কথা বলা হলেও কার্যত তা হচ্ছে না। অথচ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েই চলেছে। তাই বর্তমান সরকারকে দ্রুত নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন এবং দশম ওয়েজ বোর্ড গঠনের বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে সংবাদপত্র, অনলাইন, টেলিভিশন, রেডিও ও মাল্টিমিডিয়ার জন্য অভিন্ন ওয়েজ বোর্ড গঠন করতে হবে। সভায় সাংবাদিকদের সপ্তাহিক ছুটি দুই দিন নির্ধারণ করার দাবি জানিয়ে বলা হয়, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সপ্তাহে দুই দিন ছুটি ভোগ করে। অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও দুই দিন ছুটির ব্যবস্থা চালু রয়েছে। সাংবাদিকদের কাজের কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন সাপ্তাহিক ছুটিও পান না। এতে তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক চাপ বাড়ছে।
সভায় আরও বলা হয়, সংবাদপত্রের ওপর আরোপিত করপোরেট ট্যাক্সের উচ্চহার (২৭ দশমিক ৫ শতাংশ) এ শিল্পকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। তৈরি পোশাকশিল্পে এ হার ১৫ শতাংশ। করপোরেট ট্যাক্সের উচ্চহার ও অগ্রিম কর আদায়ের ধারা অব্যাহত থাকলে অনেক প্রতিষ্ঠিত সংবাদপত্র আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যাবে। অতএব এটি অচিরেই অপসারণ করা উচিত।