করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে চট্টগ্রামের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিকট অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে স্বাভাবিক থাকলেও স্বস্তিতে নেই আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা। বরং বিরামহীনভাবে চলছে তাদের কর্মযজ্ঞ। দেশের এমন সংকটময় মুহূর্তে গতানুগতিক আইন শৃংখলা রক্ষার পরিবর্তে তারা সামাজিক দূরত্ব ও কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতসহ মানবিক নানান কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত রেখেছে নিজেদের।
সিএমপি কশিনার মাহাবুবর রহমান বলেন, ‘এ সংকটময় পরিস্থিতিতে সিএমপি কিছু মানবিক পদক্ষেপ নিয়েছে। এ পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করতে সিএমপি’র প্রত্যেক ইউনিটের সদস্যরা বিরামহীন পরিশ্রম করছে।’
র্যাব-৭ অধিনায়ক লে. কর্ণেল মশিউর রহমান জুয়েল বলেন, ‘এখন করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলার উপর ফোকাস করছি আমরা। একই সাথে ত্রাণ বিতরণ, বিভিন্ন জায়গায় অস্থায়ী হ্যান্ড ওয়াশ পয়েন্ট তৈরি এবং সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের উপর জোর দিয়ে কাজ করছে র্যাব।’
চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক বলেন, ‘কোয়ারিন্টাইন ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের উপর জোর দিয়েছে পুলিশ। একই সাথে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ ও জীবানুনাশক বিতরণও করা হচ্ছে। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় রাতদিন পরিশ্রম করছে জেলা পুলিশের সদস্যরা।’
জানা যায়, দেশে করোনা প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলায় সার্বিক অপরাধ কমেছে জ্যামিতিক হারে। এ সময়ে মামলা রেকর্ড হওয়ার হার কমেছে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ। কোন কোন থানায় গত ১০ দিনে কোন মামলা রেকর্ডও হয়নি। মামলার হার কমলেও শান্তির ঢেকুর তুলতে পারছে না আইন শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। বরং তারা করোনা ভাইরাস ঝুঁকি নিয়েই ব্যস্ত দিন-রাত পার করছে। আইন শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত এবং কোয়ারিন্টাইন নিশ্চিত করতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করতে হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় জীবানুনাশক ছিটানো, ঘরের অবস্থান করা বাসিন্দাদের ঘরে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার পৌঁছে দেওয়া, হতদরিদ্রদের কাছে বিনামূল্যে খাবার পৌঁছে দেওয়া, অসুস্থ ব্যক্তিদের হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া এবং চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের কর্মস্থলে আসা যাওয়ার জন্য পরিবহন সুবিধা দেওয়াসহ নানান মানবিক কাজ করছে পুলিশ ও র্যাব।
সিএমপি’র খুলশী থানার ওসি প্রণব চৌধুরী বলেন, ‘এখন আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে পুলিশকে। বর্তমানে পুলিশ সদস্যদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।’
বন্দর থানার ওসি সুকান্ত চক্রবর্তী বলেন, ‘কোয়ারিন্টাইন ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বিরামহীনভাবে কাজ করছে পুলিশ। করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশের একেকজন সদস্য অতিরিক্ত পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।’
বিডি প্রতিদিন/হিমেল