চীনের উহানে প্রথম ধরা পড়ে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। এরপর বিশ্বের অন্তত ২০০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এ ভাইরাস। এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিষেধক তৈরি না হওয়ায় সতর্কতাকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে বাসে মুখ না ঢেকে কাশি দেওয়ায় এক যাত্রীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছিলেন জেসন হারগ্রোভ (৫০) নামে ওই বাসের চালক। পরে সবাইকে সতর্ক করে ফেসবুকে লাইভ ভিডিও বার্তা দেন সেই চালক। অবশেষে সেই বাসচালক মারা গেছেন। ওই ঘটনার মাত্র দুই সপ্তাহ পরে তিনি মারা গেলেন।
মৃত বাসচালক জেসন হারগ্রোভ যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের ডেট্রয়েট শহরের বাসিন্দা।
হারগ্রোভ ফেসবুক লাইভে বলেছিলেন, তার ডেট্রয়েটের বাসে একজন যাত্রী মুখে কোনো মাস্ক ছাড়াই পাঁচবার কাশি দিয়েছেন, তাকে মুখ ঢাকার কথা বলা হলেও তিনি সেটা শোনেনি। অন্যদের সতর্ক করতে তিনি এই লাইভ করেছিলেন। তার ভিডিওটি সে সময় অনলাইনে ব্যাপক শেয়ার হয়েছিল।
ডেট্রয়েট বাসচালকের ইউনিয়নের মুখপাত্র বলেছেন, ২১ মার্চ বাসে ওই নারীর কাশি দেওয়ার ঘটনার চার দিন পরে হারগ্রোভ অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেছিলেন। তাকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল। যেখানে বুধবার (২ এপ্রিল) তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।
হারগ্রোভের এই অনাকাঙ্খিত মৃত্যুর জন্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কাশি দেওয়া ওই যাত্রী দায়ী কিনা সেটা স্পষ্ট নয়। তবে ডেট্রয়েটের মেয়র মাইক ডুগান বলেছেন, চালকের করুণ মৃত্যু গণপরিবহন শ্রমিকরা যে বিপদে আছে সেটা স্পষ্ট দেখিয়ে দিয়েছে।
ডুগান বলেন, 'আপনি হারগ্রোভের ভিডিওটি কিভাবে দেখবেন সেটা আমি জানি না। তবে তিনি জানতেন যে তার জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। তাকে এমন একজন বিপদে ফেলেছে যাকে তিনি চেনেন না এবং এখন সে চলে গেছে।'
হারগ্রোভের সাড়ে আট মিনিটের ভিডিওটি কাশিযুক্ত ওই যাত্রীর সাথে বাকবিতণ্ডার কিছুক্ষণ পরে রেকর্ড করা হয়েছিল। ভিডিওতে তাকে বলতে দেখা গেছে, 'আমরা এখানকার সরকারি কর্মী, আমাদের কাজটি করে যেতে হবে। আমাদের পরিবারের যত্ন নেওয়ার জন্য একটি সৎ জীবনযাপনের জন্য এটা করতে হচ্ছে। তবে আপনি বাসে উঠে দাঁড়িয়ে মুখ না ঢেকেই বেশ কয়েকবার কাশি দিয়েছেন এবং আপনি জানেন আমরা 'মহামারিটির মাঝে রয়েছেন। আমি এটা সবাইকে এ জন্য জানাচ্ছি যাতে আমরা আন্য লোকদের যত্ন নেই।'
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম