ঈদের পর থেকে বন্ধ রয়েছে ফেনীর কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস। এতে চরম ভোগান্তির শিকার জেলার লাখ লাখ প্রবাসী। তাদের অভিযোগ, এতে নষ্ট হচ্ছে তাদের আকামা ও ভিসার মেয়াদ। তাই করোনা ঝুঁকি মাথায় নিয়ে কী করবেন সেই অনিশ্চয়তা নিয়ে দিগ্বিদিক ছুটছেন তারা।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে জরুরি সরকারি দফতর খোলা রাখার নির্দেশনা থাকলেও মঙ্গলবার ও বুধবার দুপুরে শহরের মহিপালে অবস্থিত কার্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটি তালাবন্ধ। এসময় বাইরে অপেক্ষমান রয়েছেন ২৫-৩০ জন প্রবাসী। অফিস কবে খুলবে এ নিয়ে অফিসের বাইরে নেই কোনো নির্দেশনা। এতে দূরদুরান্ত থেকে প্রবাসীরা অফিসে এসে অফিস বন্ধ দেখে চরম হতাশা হয়ে পড়েছেন।
দাগনভুঞা উপজেলার কোরাইশমুন্সি থেকে আগত জাপান প্রবাসী গোলাম মশিউর জানান, টিকার নিবন্ধন করেছেন ২০ দিন হলো ওটিপি এসেছে কিন্তু কবে টিকা দেয়া যাবে তার কোনো সুনির্দিষ্ট তারিখ জানিয়ে এসএমএস আসেনি তার কাছে। এখন এ বিষয়ে করণীয় কি জানতে কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ে একাধিকবার এসে দেখেন তালাবন্ধ।
সদর উপজেলার দুবাই প্রবাসী মজিবুল হক জানান, তিনি কীভাবে নিবন্ধন করবেন সে ব্যপারে কিছুই জানেন না। শুনেছেন কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসে করা যায় তাই এসেছেন।
ওমান প্রবাসী আরিফ হোসেন জানান, জেলা কর্মসংস্থান অফিসের ওয়েবসাইটে দেয়া রয়েছে পুরনো ভুল ঠিকানা। এতে সে ঠিকানা অনুযায়ী গিয়ে অনেকেই পড়ছেন বিড়ম্বনায়। অনেক কষ্টে বর্তমান ঠিকানায় এসে দেখি তালা লাগানো।
সাইফুল ইসলাম নামে ইউরোপ প্রবাসী জানান, ফ্লাইট চালু আছে। কিন্তু কীভাবে নিবন্ধন করতে হবে সেটা জানি না। টিকা নিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য পাচ্ছি না। এরমাঝে কাগজপত্র নিয়েও সমস্যা তৈরি হয়েছে এখন দ্রুত কীভাবে যাবো সে নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। অফিস বন্ধ থাকায় কি করে হবে সে ব্যাপারেও নির্দেশনা পাচ্ছি না।
রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের অভিযোগ, কবে, কখন, কীভাবে টিকা পাবেন কিছুই পরিষ্কার করে জানতে পারছেন না তারা। অফিস বন্ধ থাকায় সুনির্দিষ্ট কিছু জানছে না। তাদের মতে, কোনো রকম সুবিধা ছাড়াই জনশক্তি অফিস চলছে তাদের খুশি মতো। সরকারি অফিসের এমন উদাসীনতা কখনও কাম্য নয়।
এ ব্যাপারে ফেনীর জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসানের সাথে এই প্রতিবেদক সরেজমিনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ফেনী যেহেতু প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা তাই এই অফিসটি খোলা রাখা উচিত। আমি এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এ ব্যাপারে জনশক্তি ও কমর্সংস্থান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নিহার কান্তি খিসার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি মুঠোফোনে জানান, বিমান চলাচল করলেও সরকারি নির্দেশনা মোতাবেকই অফিস বন্ধ রয়েছে। লকডাউনের পর অফিস খোলার কথা থাকলেও জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় বৃহস্পতিবার বা রবিবার থেকে অফিস খোলা হবে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা