বিশ্বের সবচেয়ে বড় টু-হুইলার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান হিরো মোটোকর্প লিমিটেড বাংলাদেশের বাজারে এক অপ্রতিরোধ্য গতিতে প্রতিনয়তই ছাড়িয়ে চলেছে নিজেদেরকে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ প্রতিষ্ঠানটি এদেশের বাজারে নিয়ে আসছে তিনটি জনপ্রিয় বিশ্বমানের ব্র্যান্ড– প্যাশন এক্সপ্রো (Passion XPRO) ও স্প্লেন্ডার আইস্মার্ট+ (Splendor iSmart+) মোটরসাইকেল এবং মায়েস্ত্রো এজ (Maestro Edge) স্কুটার।
দেশের বাজারে এই নতুন টু হুইলারগুলো পাওয়া যাবে আকর্ষণীয় মূল্যে। প্যাশন এক্সপ্রো-র মূল্য থাকছে ১,০৬,৯৯০ টাকা, স্প্লেন্ডার আইস্মার্ট+ এর মূল্য ১,০১,৯৯০ টাকা এবং মায়েস্ত্রো এজ এর মূল্য থাকছে ১,২৯,৯৯০ টাকা। এপ্রিলের ১০ তারিখ থেকে দেশের সকল হিরো ডিলারশিপে পাওয়া যাবে এ মডেলগুলো।
১১০ সিসি মোটরসাইকেলের বাজারে হিরোর অবস্থান জোরদার করতে অবদান রাখবে প্যাশন এক্সপ্রো এবং স্প্লেন্ডার আইস্মার্ট+। অন্যদিকে ১১০ সিসি মায়েস্ত্রো এজের লক্ষ্য হবে মূলত বাংলাদেশের স্কুটার বাজারে কোম্পানির অবস্থান শক্ত করা।
এই মডেলগুলো বাজারজাত করার মাধ্যমে কোম্পানির পোর্টফোলিও'র আকার আরও বৃদ্ধি পেল, যার ফলে বিভিন্ন আয়ের ক্রেতাদের সক্ষমতা অনুযায়ী মোটরসাইকেলের চাহিদা পূরণ করতে পারবে কোম্পানিটি।
উত্তর ভারতের জয়পুর শহরে হিরো মোটোকর্পের বিশ্বমানের গবেষণা সংস্থা 'সেন্টার ফর ইনোভেশন অ্যান্ড টেকনোলজি'-তে (সিআইটি) এই তিনটি মডেলেরই নকশা প্রস্তুত ও অন্যান্য উন্নতি সাধন করা হয়।
বাংলাদেশে হিরো মোটোকর্পের যাত্রা শুরু ২০১৪ সালের এপ্রিলে এবং তারা কাজ করে নিটল নিলয় গ্রুপের সাথে যৌথ উদ্যোগে। কোম্পানিটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সংবলিত একটি কারখানা স্থাপন করে যশোরে, যেটি বছরে দেড় লক্ষ মোটরসাইকেল উৎপাদন করতে সক্ষম।
দেশজুড়ে ৩৫০টিরও বেশি গ্রাহক কেন্দ্রে বিক্রি হয়ে থাকে হিরো'র পণ্য। হিরো মোটোকর্পই বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো মোটরসাইকেলের জন্য পাঁচ বছরের ওয়ারেন্টি দিয়েছে। 'আমার হিরো' নামে একটি বিশেষ সুবিধাও দিচ্ছে কোম্পানিটি, যার মাধ্যমে গ্রাহক সহজ ইএমআই সুবিধা পেতে পারেন মোটরসাইকেল কেনার ক্ষেত্রে।
হিরোর যে পণ্যগুলো এখন দেশের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে তার মাঝে আছে, এইচএফ ডিলাক্স, স্প্লেন্ডার প্লাস, স্প্লেন্ডার আইস্মার্ট+, প্যাশন এক্সপ্রো, গ্ল্যামার, ইগনাইটর, এচিভার ১৫০ এবং হাঙ্ক ১৫০ মোটরসাইকেল; আর স্কুটারের বাজারে আছে প্লেজার এবং মায়েস্ত্রো এজ।
নতুন ১১০ সিসি প্যাশন এক্সপ্রো:
নতুন প্রজন্মের জন্য নকশা করা নতুন প্যাশন এক্সপ্রো'র আছে চমৎকার স্টাইলিং, আরও বেশি গতির ১১০ সিসি ইঞ্জিন এবং সেরা কিছু ফিচারের সমাহার- যা কিনা ক্রেতাকে দেবে অতুলনীয় এক অভিজ্ঞতা।
নতুন প্যাশন এক্সপ্রো'র অতুলনীয় পারফর্মেন্সের পেছনের রহস্য আসলে এর ১১০ সিসি টিওডি ইঞ্জিন, যেটি ৭ কিলোওয়াটের সর্বোচ্চ পাওয়ার উৎপাদন করতে পারে, আর দিতে পারে ৫,৫৫০ আরপিএম-এ ৯ নিউটন-মিটার টর্ক। মাত্র ৭.৪৫ সেকেন্ডেই শুন্য থেকে ৬০ কিমি/ঘণ্টা বেগ অর্জন করতে পারে বাইকটি। সেইসাথে জ্বালানি কার্যকারিতা ও দারুণ পরিষ্কার নিঃসরণ ব্যবস্থা তো আছেই।
এই মোটরসাইকেলে হিরো'র আইথ্রিএস (আইডেল-স্টপ-স্টার্ট) সিস্টেমও আছে, যা জ্বালানি বাঁচাবে জ্যামের মাঝে।
চমৎকার ডিজাইনের এ বাইকে আছে শক্তিশালী আবরণের নতুন ফুয়েল ট্যাংক, ডুয়াল টোন কালার স্কিম; সেইসাথে আধুনিক, হালকা ও সেরা গুণগত মানের এলইডি টেইল ল্যাম্প।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এ মোটরসাইকেলটি দিচ্ছে বেশ কিছু ফিচার, যেমন- ডিজিয়াল-অ্যানালগ মিটার, সাথে ডিজিটাল ফুয়েল গেজ, ট্রিপ মিটার, অলটাইম হেডল্যাম্প অন (এএইচও), ফ্রন্ট ডিস্ক ব্রেক, টিউবলেস টায়ার এবং সাইড স্ট্যান্ড ইনডিকেটর।
বাইকটি পাওয়া যাচ্ছে তিনটি আকর্ষণীয় রঙে- কালোর মাঝে লাল ডোরা, টেকনো ব্লু মেটালিক এবং স্পোর্টস রেড।
মায়েস্ত্রো এজ:
নতুন ১১০ সিসি মায়েস্ত্রো এজ এর বহুমাত্রিক ডিজাইন আর আকর্ষণীয় ফিচারের কারণে নিশ্চিতভাবেই বিবেচিত হবে বাজারের প্রিমিয়াম স্কুটার হিসেবে।
হিরো মায়েস্ত্রো এজের রয়েছে ১১০ সিসি এয়ারকুলড ফোর-স্ট্রোক সিংগেল সিলিন্ডার ওএইচসি ইঞ্জিন, যা ৬ কিলোওয়াটের সর্বোচ্চ পাওয়ার উৎপাদন করতে পারে, আর দিতে পারে ৭,৫০০ আরপিএম-এ ৮.৯ নিউটন-মিটার সর্বোচ্চ টর্ক।
স্টাইলিশ এই স্কুটারের আছে মোবাইল চার্জিং পোর্ট আর বুট ল্যাম্প, এক্সটারনাল ফুয়েল ফিলিং, ইন্টিগ্রেটেড ব্রেকিং, রিমোট সিট এবং ফুয়েল লিড ওপেনিং, ডিজি-অ্যানালগ স্পিডোমিটার। সাথে থাকছে সাইড স্ট্যান্ড ও সার্ভিস ডিউ ইনডিকেটর এবং টুইন এলইডি টেইল ল্যাম্প ইত্যাদি।
হিরো মায়েস্ত্রো এজ আসছে দুটো রঙে- ক্যান্ডি ব্লেজিং রেড এবং ম্যাট ব্লু।
স্প্লেন্ডার আইস্মার্ট+
নতুন স্প্লেন্ডার আইস্মার্ট+ মূলত তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করার জন্যই বাজারজাত করা, যা একই সাথে দিচ্ছে সেরা পারফর্মেন্স আর দীর্ঘস্থায়ীত্ব। আর স্প্লেন্ডার ব্র্যান্ডের বরাবরের মতো আস্থা, নির্ভরযোগ্যতা ও জ্বালানি কার্যকারিতা তো আছেই।
শক্তিশালী কমিউটারের সাথে আছে নতুন এয়ারকুলড ফোর স্ট্রোক সিঙ্গেল সিলিন্ডার ওএইচসি ১১০ সিসি টিওডি ইঞ্জিন যাতে আছে খুবই কার্যকরী আইথ্রিএস প্রযুক্তি। ইঞ্জিনটি ডিজাইন করা হয়েছে নির্ঝঞ্ঝাটভাবে চালানোর উপযোগী করে, এর পরিশোধনের ক্ষমতাও থাকছে উচ্চমাত্রার। ইঞ্জিনটি ৬.৭ কিলোওয়াটের সর্বোচ্চ পাওয়ার উৎপাদন করতে পারে ৭,৫০০ আরপিএম-এ, আর দিতে পারে ৫,৫০০ আরপিএম-এ ৯ নিউটন-মিটার সর্বোচ্চ টর্ক।
স্টাইলিশ এই নতুন মোটরসাইকেলের কার্যকারিতা আর আরাম নিশ্চিত করতে রয়েছে নানা ফিচার, যেমন- অলটাইম হেডল্যাম্প অন (এএইচও), ডিজিটাল অ্যানালগ মিটার এবং সাইড স্ট্যান্ড ইনডিকেটর। সুন্দর নকশা এবং স্প্লিট গ্র্যাব রেইল ফিচার মোটরসাইকেলটিকে করে তুলেছে আরও আবেদনময়।
স্প্লেন্ডার আইস্মার্ট+ মোটরসাইকেল পাওয়া যাচ্ছে তিনটি রঙে- টেকনো ব্লু মেটালিক, ব্ল্যাক স্পোর্টস রেড এবং স্পোর্টস রেড।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল