সোমবার, ২৮ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

চার বছরেও শেষ হয়নি রাধিকা নবীনগর সড়ক নির্মাণ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

চার বছরেও শেষ হয়নি রাধিকা নবীনগর সড়ক নির্মাণ

আগে হাতে টাকা পামু, তারপর জমি দিমু, এই সিদ্ধান্তে এলাকাবাসী অটল থাকায় ও ভূমি অধিগ্রহণ নিয়েও রয়েছে জটিলতা। এসব কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর-রাধিকা সড়ক নির্মাণ কাজ চার বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো শেষ হয়নি। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় সড়কটির নির্মাণ কাজ নিয়ে সংশয় প্রকাশ কর্তৃপক্ষের। চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলেছে, দ্রুত সমস্যা সমাধান করা হবে। জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর-শিবপুর-রাধিকা সড়ক দিয়ে পূর্বাঞ্চলের ৬টি ইউনিয়সহ পার্শ্ববর্তী আখাউড়া ও কসবা উপজেলার হাজারো মানুষের যাতায়াত। জেলার সংযোগ সড়ক এটি। নবীনগর পৌর এলাকার আলীয়াবাদ গ্রাম থেকে রাধিকা পর্যন্ত সাড়ে ১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়ক নির্মাণ কাজ ৩৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হয় প্রায় ৪ বছর আগে। জমি অধিগ্রহণ করা হলেও টাকা দেওয়া হচ্ছে না। টাকা না পাওয়ার কারণে জমি ছাড়ছে না মালিকরা। এই সড়কের নির্মাণ কাজের প্রকল্পের মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। স্থানীয় এমপি মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল, জল্লা ও কনিকাড়া গ্রামের জমির মালিকদের সঙ্গে একাধিকার বৈঠক করেছেন। জমির মালিকদের এক কথা- ‘হাতে আগে টাকা পামু, তারপর জমি দিমু।’ সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, জায়গার সমস্যার কারণে ধীরগতিতে চলছে নির্মাণ কাজ। ফলে রাস্তায় তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত, সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তার ওপর জমে যায় পানি, কাদামাটিতে আটকে যাচ্ছে যানবাহন। প্রতিনিয়ত ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে এই সড়ক। পূর্বাঞ্চলের ৬টি ইউনিয়নের জনগণের উপজেলা সদরে আসার একমাত্র সড়কপথ এটি হওয়ার কারণে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই পথ দিয়ে যাতায়ত করতে হয়। যাতায়াত করতে গিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে এই সড়কে চলা যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা। এই সড়কটি জেলা সদরসহ পাশর্^বর্তী কসবা ও আখাউড়া উপজেলার সঙ্গে সড়কপথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। এই পথের সিএনজির কয়েকজন চালক বলেন, এই সড়ক মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে পেটের দায়ে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। কাদায় ও পানিতে আটকে যাচ্ছে আমাদের গাড়ি, নষ্ট হচ্ছে যন্ত্রপাতি। গাড়িতে থাকা যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, কাদায় গাড়ি আটকে যাচ্ছে, কিছুক্ষণ পরপর গাড়ি থেকে নেমে কাদার ওপর দিয়েই হেঁটে আসতে হচ্ছে। এই সড়কে আসলে মনে হয় দেশের কোনো বাপ-মা নেই। বাপ-মা থাকলে সড়কের অবস্থা এমন থাকত না। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করার দাবি করছি। জমির মালিকদের অভিযোগ, জমি অধিগ্রহণ করা হলেও টাকা দেওয়া হচ্ছে না। অধিগ্রহণের টাকা নিয়ে টালবাহানা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, আমরা অধিকাংশ জমির মালিক হতদরিদ্র। অধিগ্রহণ করা ভিটেবাড়ি ছাড়া আমাদের বসতির অন্য কোনো জায়গা না থাকায়, বসতভিটে ছাড়তে পারছি না। এদিকে নানা জটিলতা ও প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় সড়কটি নির্মাণ কাজ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে নবীনগর-রাধিকা সড়কের ইঞ্জিনিয়ার আলী হাসান বলেন, বাড়িঘর থাকার কারণে আমরা রাস্তার কাজ করতে পারছি না। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। আল্লাহই জানেন, প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কী হবে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পংকজ ভৌমিক বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে সব জটিলতা নিরসন করে সড়ক নির্মাণ কাজের গতি বাড়ানো হবে।

নবীনগর উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনির বলেন, স্থানীয় এমপি এই রাস্তার অধিগ্রহণের টাকা মালিকদের বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করছেন। আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে সব সমস্যা নিরসন হবে এবং রাস্তার কাজও দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে।

সর্বশেষ খবর