সোমবার, ৫ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

করোনায় ওষুধের কৃত্রিম সংকট

করোনায় আক্রান্ত রোগীর পাশাপাশি সাধারণ রোগীর চাহিদা অনুযায়ী নাপা, এইচ প্লাস, নাপা সিরাপ ও জিংক টেবলেটসহ প্যারাসিটামল জাতীয় কয়েকটি ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে

আব্দুল লতিফ লিটু, ঠাকুরগাঁও

করোনায় ওষুধের কৃত্রিম সংকট

দেশের উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা ঠাকুরগাঁও। এখানে দিন দিন বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। শহর জুড়ে করোনা শনাক্ত হচ্ছে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশেরও বেশি। এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতালগুলোতে বেড়েই চলেছে রোগীর চাপ। সে সঙ্গে বাড়ছে প্রয়োজনীয় ওষুধের চাহিদাও। করোনায় আক্রান্ত রোগীর পাশাপাশি সাধারণ রোগীর চাহিদা অনুযায়ী নাপা, নাপা এক্সট্রা, এইচ প্লাস, নাপা সিরাপ ও জিংক টেবলেটসহ প্যারাসিটামল জাতীয় কয়েকটি ওষুধ কম্পানির ওষুধ সংকট দেখা দিয়েছে জেলার ওষুধের দোকান ও ফার্মেসিগুলোতে। চাহিদাপত্র নিয়ে দোকানে দোকানে ঘুরেও ওষুধ না পেয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন দূর দূরান্ত থেকে আসা রোগী ও স্বজনরা। চাহিদা অনুযায়ী ওষুধ না পেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা। অপরদিকে ব্যবসায়ীরা তাকিয়ে রয়েছেন ওষুধ কোম্পানির এজেন্টদের দিকে। সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সারা দেশের ন্যায় ঠাকুরগাঁওয়ের করোনা পরিস্থিতির বেশ অবনতি হয়েছে। সেই সঙ্গে বর্ষায় ভাইরাস জনিত ঠান্ডা, কাশি, জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে ওষুধের দোকানগুলোতে। কিছু ফার্মেসিতে এ ওষুধ পাওয়া গেলেও দ্বিগুণ দাম নিচ্ছেন। আবার কেউ দাম বেশি পাবার আশায় কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। পাঁচ বছরের ছেলের জ¦রের জন্য ওষুধ নিতে এসে না পেয়ে হতাশায় বাড়ি ফিরেন শহরের মইনুল ইসলাম। তার মতোই প্রয়োজনীয় জ¦র সর্দির ওষুধ না পেয়ে দোকানের এক কোনায় চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় মাজেদুর নামের আরেক রোগীর স্বজনকে। এ বিষয়ে ফার্মেসির মালিকরা জানায়, আমাদের চাহিদার তুলনায়  কোম্পানিগুলো আমাদের ওষুধ সরবরাহ করতে পারছে না। বিশেষ করে নাপা ট্যাবলেট, নাপা সিরাপ, এইচ ট্যাবলেট ও এইচ সিরাপ এর চাহিদা অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় কয়েকগুণ বেড়ে  গেছে। গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ‘প্যারাসিটামল’ গ্রুপের ওষুধ প্রথম সারির প্রায় সব  কোম্পানি সরবরাহ করছে না। ফলে এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান জানান, কৃত্রিম সংকট তৈরি করে নির্ধারিত দামের চেয়ে অর্থাৎ এমআরপি’র বাইরে ওষুধ বিক্রি করা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে দন্ডনীয় অপরাধ। আমি বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়ে ওষুধের দোকানগুলোতে গোপনে তদারকি করব।  কোনো ফার্মেসিতে এ ওষুধগুলোর কৃত্রিম সংকট তৈরি করলে এবং বেশি দামে বিক্রির প্রমাণ পেলে তাদের লাইসেন্স বাতিলসহ তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর