মঙ্গলবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

চড়া সুদে দিশাহারা কৃষক

সৈয়দ বয়তুল আলী, মৌলভীবাজার

চড়া সুদে দিশাহারা কৃষক

চড়া সুদে ঋণ নিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন মৌলভীবাজার জেলার প্রান্তিক কৃষকরা। মাত্র তিন মাসে মহাজনকে লাভ দিতে হয় দিগুণের বেশি টাকা। সুদে টাকা লেনদেন এ জেলায় অনেকটা ওপেন সিক্রেট। আবার কেউ কেউ এজেন্ট ব্যাংকিং, সমবায় সমিতি, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সংস্থার আড়ালে করছেন সুদের রমরমা বণিজ্য। ফলে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেও কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তন হচ্ছে না। এদিকে কিছু অসাধু ব্যাংক কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সিন্ডিকেটের কারণে সরকারের দেওয়া প্রণোদনাসহ কৃষি খাতের অন্যান্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা। একাধিক অভিযোগ থাকার পরও প্রতিকারে পদক্ষেপ করছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। জানা যায়, রাজনগর উপজেলার কাউয়াদিঘি হাওরপারের কৃষকরা এক ফসলি বোরোর ওপর নিভর্রশীল। বোরো মৌসুম শেষে এসব কৃষক চার-পাঁচ মাস বেকার থাকেন। ওই সময় তারা কাজের খোঁজে যান জেলার বাইরে বিভিন্ন স্থানে। গত দুই বছর করোনায় বাইরে কাজে যেতে পারেননি তারা। সংসারের খরচ মেটাতে কেউ কেউ হয়েছেন ঋণগ্রস্ত। অনেকে সুধে টাকা এনেছেন।

 চলতি মৌসুমে বোরো আবাদ করতে গিয়ে আর্থিক সংকটে পড়েছেন এসব চাষি। হাওরপারের কৃষকরা জানান, ব্যাংকে কৃষি ঋণের জন্য গেলে কাগজপত্রের ঝামেলাসহ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বিদায় করে দেয় কর্তৃপক্ষ। বাধ্য হয়ে দিগুণ সুদে স্থানীয় মহাজন ও দাদন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে চাষাবাদ করি। কৃষকরা আরও জানান, বোরো চাষের জন্য মাঘ মাসে মহাজনরে কাছ থেকে ১ হাজার টাকা ঋণ নিলে ঘরে ধান তোলার পর ওই ১ হাজার টাকার সঙ্গে সুদ হিসেবে দিতে হয় দেড় মণ ধান। যার বাজারমূল্য ১৫০০-১৬০০ টাকা। স্থানীয়রা এটাকে ধানের দাদন (উর) বলে। রাজনগর কৃষি অফিস জানায়, এ উপজেলায় মোট ২৬ হাজার ৩৫৯ জন কৃষক রয়েছেন।। রাজনগর কৃষি ব্যাংক চলতি বোরো মৌসুমে মাত্র ৭০ জন কৃষককে ১ কোটি এবং সোনালী ব্যাংক ৮০ জনকে ৩৬ লাখ ৪৪ হাজার টাকা ঋণ দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন যুক্তরাজ্য ফেরত প্রবাসী বলেন, এখানকার অনেক চায়ের দোকানিও দাদন ব্যবসায় জড়িত। মৌলভীবাজারে দাদন ব্যবসা ওপেন সিক্রেট। কৃষি ব্যাংক রাজনগর উপজেলা শাখার ব্যবস্থাপক মস্তাক আহমদ বলেন, যারাই আমার কাছে এসেছেন তাদের ঋণ দিয়েছি। কিন্তু দেখা গেছে কৃষক ছাড়াও অনেকে ঋণ নিতে আসেন। রাজনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ ইফতাত আরা ইসলাম বলেন, কৃষি ব্যাংকসহ সব ব্যাংক থেকে ১০ টাকার হিসাবের মাধ্যমে কৃষককে ঋণ দেওয়ার কথা। কিন্তু এটা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর