রবিবার, ৫ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

মহাসড়কের পাশে ভাগাড়

সাজ্জাদ হোসেন, নড়াইল

মহাসড়কের পাশে ভাগাড়

নড়াইল-যশোর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে সদর পৌরসভার পশ্চিম সীমানা লাগোয়া সীতারামপুর এলাকায় নির্ধারিত স্থানে নড়াইল পৌরসভার বর্জ্য ফেলায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে পথচারী, যানবাহনের যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মহাসড়কের পাশেই ময়লার ভাগাড় থাকায় জনজীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। আবর্জনার স্তূপ থেকে তীব্র দুর্গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। দুর্গন্ধে মহাসড়কে চলাচলকারী হাজারো যানবাহনের যাত্রী ও পথচারীর এ স্থান দিয়ে চলার সময় নাকে রুমাল চেপে চলতে হয়। যে কারণে বর্জ্য ফেলার স্থানটি ওই এলাকার বাসিন্দাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে বর্জ্য ফেলার স্থান সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এদিকে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর নড়াইল কার্যালয় কর্তৃপক্ষ নড়াইল-যশোর আঞ্চলিক মহাসড়কের পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে নড়াইল পৌরসভার প্রবেশমুখে ‘মহাসড়কে ময়লা ও আবর্জনা ফেলা শাস্তিযোগ্য অপরাধ’ মর্মে একটি সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড লাগিয়েই দায় সেরেছে।  জানা যায়, দেশ স্বাধীনের পর পর নড়াইল পৌরসভা গঠিত হলেও বর্জ্য ফেলার জন্য কোনো নির্দিষ্ট স্থান ছিল না। পৌরসভায় ঢোকার মুখেই ২০১৩ সাল থেকে নড়াইল-যশোর আঞ্চলিক মহাসড়ক সংলগ্ন নতুন বাস টার্মিনালের প্রবেশ পথের একটি গর্তে ময়লা ফেলা শুরু হয়। ওই গর্ত ছাপিয়ে টার্মিনাল চত্বর থেকে সড়ক পর্যন্ত ভাগাড়ে পরিণত হয়। যে কারণে বর্তমান পৌর মেয়র আনজুমান আরা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বর্জ্য  ফেলার জায়গা ক্রয় ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার জন্য ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০ শতক জমি কিনেছেন। সেই ক্রয়কৃত জমিতে চলতি বছর এপ্রিল মাস থেকে ওই নির্ধারিত স্থানে ময়লা ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই নির্ধারিত ক্রয়কৃত জমিতে নয়, এর ঠিক পাশেই মহাসড়কের ফুটপাথজুড়ে ময়লা-আবর্জনা ও বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য ফেলার কারণে স্তূপ তৈরি হয়েছে। এ ময়লার স্তূপে প্রতিনিয়ত পৌর শহরের বাসাবাড়ি, হাট-বাজারসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য, পচা শাকসবজি, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠাসহ নানা ধরনের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। আবার কখনো কখনো রাস্তার পিচের ওপর আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এসব ময়লার ভাগাড়ে পশু-পাখি, শূকরের দল ও কুকুর-বিড়াল খাবারের উচ্ছিষ্ট ভক্ষণ করার সময় এলোমেলো করে মহাসড়কে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ফেলছে। আর সড়কের ওপরের এসব ময়লা-আবর্জনা যানবাহনের চাকায় পিষ্ট হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এবং এসব ময়লা ধুলায় পরিণত হয়ে বাতাসে উড়ছে। বিশেষ করে বাতাসে ময়লা-আবর্জনা ও বিষাক্ত ধুলা উড়ে আশপাশের বাড়িঘরসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ছে। এভাবে প্রতিদিন সকালে এবং গভীর রাতে পৌরসভার বর্জ্য ফেলার ট্রাক এবং ৭-৮টি ভ্যানগাড়ি দিয়ে ওই স্থানে        আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। ফলে ময়লার এ স্তূপটি এলাকাবাসীর জন্য অভিশাপ বলে মন্তব্য করেন বাসিন্দারা। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়কের পাশে ফুটপাথ দখল করে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ করে রাখা হয়েছে। রাজকুমার দাস ও কাঞ্চি কুমার দাস নামের দুজন রাখাল শূকরের দল ছেড়ে দিয়ে ফেলে রাখা ময়লা-আবর্জনার মধ্যে চড়াচ্ছে। এ সময় শূকরের দল খাবারের উচ্ছিষ্ট ভক্ষণ করতে গিয়ে টেনেহিঁচড়ে এলোমেলো করে মহাসড়কে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ফেলছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর