বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

সাবেক ইউপি সদস্যকে গলা কেটে হত্যা

নরসিংদী প্রতিনিধি

পূর্ব শত্রুতার জের ধরে  নরসিংদীর হাজিপুরে প্রকাশ্যে সাবেক ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে ও গলা কেটে  হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এ সময় নিহতের ছেলে সুজনসহ ২ জন আহত হয়েছে। গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে নরসিংদীর উপ-শহর হাজিপুরের কাঠবাজার নিহতের নিজ দোকানে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সুজিত সূত্রধর (৫৩) হাজিপুর ৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য এবং হাজিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন। নিহতের পরিবারের অভিযোগ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে মামলা মোকদ্দমার জের ধরে ইউপি চেয়ারম্যানের মদদে তার লোকজন এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এর আগে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পিন্টুর বিরুদ্ধে ২০০৬ সালে হাজিপুর ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সরকার ও তার ভাই রিপন সরকারকে প্রকাশ্যে নিহতের বাড়ির সামনে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে। নিহতের ছেলে সুজিত সূত্রধর জানিয়েছেন, সন্ধ্যার পর নিহত সুজিত বাড়ি থেকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসে। ওই সময় তার ছেলের সঙ্গে ব্যবসায়ীক বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিল। রাত সাড়ে ৮টার দিকে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানের পরিচিত ২৫/৩০ জন সন্ত্রাসী দা, ছোরা ও ধারাল অস্ত্র নিয়ে সাবেক মেম্বার সুজিত সূত্রধরের উপর হামলা চালায়। ওই সময় সন্ত্রাসীরা সুজিত মেম্বারকে এলোপাতাড়ি  কোপাতে থাকে। ওই সময় নিহতের ছেলে ও দোকানের কর্মচারীরা তাদের বাধা দিতে এগিয়ে গেলে তাদেরকেও পিটিয়ে আহত করে। পরে সন্ত্রাসীরা সুজিত মেম্বারকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে। ওই সময় তাদের আত্মচিৎকারে কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ খবর নিহতের স্বজনদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে বাড়িতে কান্নার রোল পড়ে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের ছেলে সুজন সূত্রধর আরও জানিয়েছেন, ইউপি সদস্য থাকাকালীন পরিষদের চাল ও গম বিতরণের অনিয়মসহ নানা বিষয়ে হাজিপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পিন্টুর সঙ্গে বিরোধ ছিল। বিরোধের জের ধরে চেয়ারম্যানের নামে একাধিক মামলা করেন নিহত সুজিত সূত্রধর। মামলার জের ধরে তার বাবার উপর একাধিক বার হামলা করেছে পিন্টু চেয়ারম্যান। এই সঙ্গে মামলা তুলে না নিলে আমার বাবাকে মেরে ফেলবে বলেও হুমকি দিয়ে আসছিল। বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেছেন, নিহত সুজিত মেম্বার  জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন। বর্তমান আওয়ামী সন্ত্রাসীরা তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। অন্যথায় আন্দোলনে নামবে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। জানতে হাজিপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পিন্টুর মোবাইল ফোনে একাধিক বার ফোন করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে চেয়ারম্যান মনির জানিয়েছেন,শত্রু কখনো শত্রুকে মারে না। বাজারে বার্নিস মেস্তুরিদের টাকা পয়সা নিয়ে নিহত সুজিতের ছেলে সুজনের সঙ্গে ঝগড়া হয়। এরই জের ধরে সুজিত মেম্বারকে হত্যা করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(অপরাধ)  সাহেব আলী পাঠান জানিয়েছেন,ঠিক কি কারণে হত্যাকা টি সংঘটিত হয়েছে। তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে এই দুই পক্ষের মধ্যেই মামলা মোকদ্দমা ছিল। হত্যার রহস্য ও আসামি গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।

সর্বশেষ খবর