মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

পাট নিয়ে বিপাকে কৃষক

দেবাশীষ বিশ্বাস, রাজবাড়ী

পাট নিয়ে বিপাকে কৃষক

সোনালি আঁশ হিসেবে পরিচিত পাট। পদ্মাপারের ছোট্ট জেলা রাজবাড়ীতে পাটের চাষ হয়। বাংলাদেশে উৎপাদিত মোট পাটের প্রায় ৭ শতাংশ চাষ হয় রাজবাড়ীতে। কয়েকটি পাটকল স্থাপিত হওয়ায় পাটে সমৃদ্ধ রাজবাড়ী জেলা। কিন্তু এ বছর জেলার চাষিরা পাট নিয়ে বিপাকে রয়েছেন। এখনো বর্ষা মৌসুম শেষ হয়নি। কিন্তু বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মাঠে পানি জমেনি। খাল-বিল ও হাওরে পানির স্বল্পতা রয়েছে। ফলে পাট পচাতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। সরেজমিনে রাজবাড়ী সদর ও বালিয়াকান্দির বিভিন্ন মাঠে দেখা যায়, বেশির ভাগ জমির পাট কাটা শুরু হয়নি। বৃষ্টি না হওয়ায় মাঠে পানি জমেনি। জমি থেকে খালের দূরত্ব অনেক। যে কারণে সেখানে পাট নেওয়া কষ্টকর। খালের অনেক জায়গায় পাট জাগ দিতে দিচ্ছেন না প্রভাবশালী মহল। অনেক জমির পাট খেতেই নষ্ট হচ্ছে। কৃষকরা মূলত বৃষ্টির পানির জন্য অপেক্ষা করছেন। বৃষ্টির পানিতে মাঠে জলাবদ্ধতা শুরু হলে পুরোদমে পাট কাটা শুরু হবে। তবে কিছু কিছু জমির পাট কেটে খালে, বাড়ির পুকুরে জাগ দিচ্ছেন কৃষকরা। জমি থেকে অনেক দূরে পাট নিয়ে জাগ দেওয়ার কারণে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এ বছর রাজবাড়ীতে ব্যাপক পাট চাষ হয়েছে। জেলার পাঁচটি উপজেলায় ৪৯ হাজার ১২২ হেক্টর জমিতে পাটচাষ হয়েছে। যা গতবারের থেকে প্রায় ১ হাজার হেক্টর বেশি। আশা করা হচ্ছে এ বছর জমিতে সোয়া লাখ মেট্রিক টন পাট উৎপাদন হবে। পাট চাষিরা বলেন, এ বছর রাজবাড়ীতে পাটের স্বাভাবিক ফলন হয়েছে। বাজারদর ভালো আছে। কিন্তু পানি না থাকায় পাট কাটা সম্ভব হচ্ছে না। পুকুরে পাট জাগ দেওয়ার কারণে পুকুরের মাছ মারা যাচ্ছে। এ বছর রাজবাড়ীতে একপাখি (২২ শতাংশ) জমিতে ৬ থেকে ৮ মণ পর্যন্ত ফলনের আশা করা হচ্ছে। পাট পচানো নিয়ে গতকাল জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। কৃষকদের বিপাকের কথা তুলে ধরেছেন রাজবাড়ী সদর উপজেলা পরিষদ ও বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা।

 এ সময় কৃষি কর্মকর্তারা কোথায় রয়েছেন সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইমদাদুল হক বিশ্বাস। স্লুইসগেটের মাধ্যমে পানি ব্যবস্থাপনার সুষ্ঠু বণ্টন না করায় স্থানীয় সরকার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। জেলা পাট অধিদফতরের পরিদর্শক মো. হারুন অর রশিদ বলেন, বর্তমানে সরকারের কাছে পাট পচানোর আধুনিক কোনো ব্যবস্থা হাতে নেই। স্লুইচগেটের ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পরামর্শ এই কর্মকর্তার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর