মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

সার্কাসের নামে চলছে অশ্লীল নৃত্য, জুয়ার আসর

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

সার্কাসের নামে চলছে অশ্লীল নৃত্য, জুয়ার আসর

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে কথিত সার্কাসের নামে চলছে অশ্লীল নৃত্য ও রমরমা জুয়ার আসর। অভিযোগ উঠেছে আসর ঘিরে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকা লেনদেন হচ্ছে। এ ছাড়া অতিরিক্ত সাউন্ড ও অসামাজিক নানা কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। কমিটির ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না। কথিত ‘পৌষ মেলার’ নামে ১৭টি শর্তে এ মেলার অনুমতি পায় আয়োজক কমিটি। তারা অধিকাংশ শর্ত ভঙ্গ করলেও নীরব স্থানীয় প্রশাসন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, মেলার নামে মূলত অশ্লীল নৃত্য, মদ ও জুয়ার আসর বসানো হয়েছে। এই জুয়ায় প্রতিরাতে লেনদেন হচ্ছে কয়েক লাখ টাকা। এসব করা হচ্ছে টাকার বিনিময়ে অনেকের মুখ বন্ধ করে। জানা গেছে, লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের তালুক বাণীনগরে দলগ্রাম-শান্তিগঞ্জ সড়কের পাশে চলছে এ মেলা। তালুক বাণীনগর ইজিবাইক সমবায় সমিতির পক্ষে মাসব্যাপী পৌষ মেলা আয়োজনের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে। গত ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এই মেলায় ছোটখাটো কয়েকটি খাবার ও দুটি কসমেটিক্সের দোকান ছাড়া তেমন কিছু নেই। তবে চলছে ‘দি নিউ লাকি সেভেন সার্কাস’। জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত মাসব্যাপী এই মেলা চলবে।

পৌষ মেলায় সার্কাস, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাগরদোলা, জাদুখেলা, মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেল খেলা প্রদর্শনীর জন্য অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। অনুমতির শর্তে বলা হয়েছে, সার্কাসে সুস্থ বিনোদনসহ প্রতিদিনের কার্যক্রম রাত ৯টার মধ্যে শেষ করতে হবে। অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া আয়োজন করা যাবে না। উচ্চ আওয়াজে মাইক বা শব্দযন্ত্র ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, মাদক কেনাবেচা বা ব্যবহার নিষিদ্ধসহ বিভিন্ন বিধিনিষেধের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে অনুমতির শর্তগুলোতে। সরেজমিন দেখা গেছে, তালুক বাণীনগরে ধান চাষ হয় এমন জমিতে এবার চারা রোপণ বন্ধ রেখে মালিকদের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে কথিত এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এ মেলায় ছোটবড় মিলিয়ে দোকান রয়েছে মাত্র ১০টি। আর অনুসন্ধানে জানা গেছে, দি নিউ লাকি সেভেন সার্কাস পেশাদার কোনো সার্কাস দল নয়। কথিত এই সার্কাসের প্রতিটি শোতে এক ঘণ্টারও কম সময় দেখানো হয় খেলাধুলা। বাকি সময় চলে নাচ-গান। অনুমতির শর্তানুযায়ী রাত ৯টায় কার্যক্রম শেষ করার কথা বলা হলেও রাতের শো শুরু হয় ১০টার দিকে। রাতে কুরুচিপূর্ণ নাচ দেখতে দর্শকে ভরা পুরো প্যান্ডেল। প্যান্ডেলের পেছনে দুই পাশে বসানো হয় দুটো ‘ডাবুর বোর্ড’। রাত প্রায় দেড়টা পর্যন্ত এই জুয়া ও নৃত্য চলে। আয়োজক কমিটির সভাপতি সহিদার রহমান বলেন, আমরা সার্কাসের অনুমতি নিয়েছি। কিন্তু প্যান্ডেলের পাশে জুয়া বসলে আমার করার কী আছে? আর এখানে কোনো অশ্লীল নৃত্য হচ্ছে না। লালমনিরহাট পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, বাণীনগরের কোথায় সার্কাস হচ্ছে আমার জানা নেই। খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, সার্কাসে পাশাপাশি অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া চলছে কিনা খোঁজ-খবর নেওয়া হবে। শর্তের বাহিরে সার্কাসে অশ্লীল নৃত্য ও জুয়া চালালে অব্যশই বন্ধ করে দেওয়া হবে।

 

সর্বশেষ খবর