ট্রেন ছাড়তে দেরি হওয়ায় কুমিল্লার সদর রসুলপুর রেলওয়ে স্টেশনে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা অভিমুখী তূর্ণা নিশিথা, ঢাকা মেইল ও ঢাকা এক্সপ্রেস ট্রেনে ছোড়া হয়েছে পাথর। এ সময় ঢাকা মেইলের লোকোমাস্টার, সদর রসুলপুর স্টেশনের স্টেশন মাস্টার ও স্টেশনের পয়েন্টস ম্যান আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় নয়জনকে গ্রেফতার গতকাল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রেলওয়ের একটি সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ঢাকা অভিমুখী ঢাকা এক্সপ্রেস ট্রেন সদর রসুলপুর স্টেশনে প্রবেশ করে। এদিন আখাউড়া জংশনে ইন্টারলক সিস্টেম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ট্রেনটি সদর রসুলপুরে অপেক্ষা করে প্রায় আড়াই ঘণ্টা। রাত ২টার দিকে ঢাকা মেইলও সদর রসুলপুর স্টেশন অতিক্রম করছিল। এর কিছু সময় পর ঢাকা তূর্ণা নিশিথা এই স্টেশন পার করে। এর আগেই বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা স্টেশনে ভাঙচুর শুরু করেন। তারা ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করতে থাকেন। ভাঙচুর চলাকালে ঢাকা মেইল ও তূর্ণা নিশিথা ট্রেন সদর রসুলপুর স্টেশন অতিক্রম করতে থাকায় ওই ট্রেনেও পাথর নিক্ষেপ করা হয়। এ সময় ঢাকা মেইলের লোকোমাস্টারের মাথায় পাথরের আঘাত লাগে। তূর্ণা নিশিথার কয়েকটি জানালার কাচ ভেঙে যায়। আহত হন সদর রসুলপুর স্টেশন মাস্টার কামরুজ্জামান ও পয়েন্টসম্যান। সূত্র আরও জানায়, আখাউড়া স্টেশনে ইন্টারলক সিস্টেম বন্ধ থাকায় এদিন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রায় সব ট্রেনই শিডিউল বিপর্যয়ের কবলে পড়ে। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলরুটের লাকসাম থেকে গঙ্গাসাগর স্টেশন পর্যন্ত ৩৮টি সিগন্যাল মোটর চুরি হওয়ায় কাছাকাছি অন্য কোনো স্টেশনে ট্রেনগুলোর যাত্রাবিরতি দিতে পারেনি রেলওয়ে কট্রোল অফিস। রেলের পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রাম বিভাগের সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা-২ ফেরদৌস আহমেদ জানান, আখাউড়ায় ইন্টারলক সিস্টেম বন্ধ থাকায় বিভিন্ন লাইন বন্ধ হয়ে যায়। এতে স্টেশনের ধারণক্ষমতা কমে যায়। ফলে ট্রেনগুলো পাস দিতে বিলম্ব ঘটে। এতে যাত্রীরা ক্ষুব্ধ হন। এ ঘটনায় রেলওয়ের পক্ষ থেকে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। রেলওয়ে পুলিশ থেকে করা হয়েছে আরেকটি তদন্ত কমিটি। লাকসাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ আলম গতকাল সন্ধ্যায় জানান, হামলার ঘটনায় সদর রসুলপুর স্টেশন মাস্টার বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৮০-৯০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। নয়জনকে গ্রেফতারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
