স্কুল ভবনের বারান্দায় ফল, মাছ-মাংস বিক্রেতার হাঁকডাক, বাজানো হচ্ছে মাইক, ১০ হাত দূরে পিঁয়াজ-আলুর স্তূপ। এ অবস্থা মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সহড়াতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ১৯৩৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়ের বারান্দা, খেলার মাঠ, শ্রেণিকক্ষের পাশ ঘেঁষে সপ্তাহে দুই দিন বসে হাট। এতে ব্যাহত হয় পাঠদান। অভিভাবকরা জানান, শুধু হইচই নয়, হাট শেষে বারান্দা-মাঠ ভরে যায় কাদায়-ময়লায়। পরদিন সেই ময়লা পরিষ্কারের দায়িত্ব পড়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাঁধে। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ক্লাসে ঢুকে দেখি বারান্দা মাছের আঁশে ভরা, শ্রেণিকক্ষে পচা গন্ধ এ অবস্থায় আমরা কীভাবে পাঠদান করব?’ ‘স্যার, বইয়ের পাতা খুললে মাছের গন্ধ পাই’ এ কথা বলেই মুখ গুঁজে রাখে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী তামান্না খাতুন।
প্রবীণ বাসিন্দা ও বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠার সাক্ষী মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘যেখানে আমাদের সন্তানদের কলম ধরা শিখবার কথা, সেখানে তারা শিখছে কীভাবে হাটের গন্ধ সহ্য করে বাঁচতে হয়।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাবিয়া সালমা বলেন, ‘আমরা শতবার লিখেছি, গেছি ইউএনও অফিসে, জেলা প্রশাসকের কাছে গিয়েছি। কিন্তু আমাদের চিঠিগুলো ফাইলেই রয়ে গেছে।’ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আমীন বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক।’ গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।