জয়পুরহাট শহরের ঐতিহ্যবাহী ‘মাছুয়া বাজার’। বাজারের তরকারি ও স্টেশনারি সামগ্রী বিক্রির পাকা ভবনটি অনেক আগেই ড্যামেজ হওয়ায় খসে পড়ছে পলেস্তারা। ছাদ-দেয়ালের রড বের হয়ে গেলও ঝুঁকি নিয়ে সেখানে চলছে বেচাকেনা। মাছ কেনাবেচার টিনশেড ঘরগুলোও জরাজীর্ণ। ড্রেনেজ ব্যবস্থা অকেজো হওয়ায় বৃষ্টি হলেই ডুবে যায় পুরো বাজার। এখানে পণ্য কিনতে এসে দুর্ভোগে পড়েন শহরবাসী।
শহরের আমতলী এলাকার ক্রেতা মাসুদ রানা বলেন, বাজারটির দীর্ঘদিন ধরে এমন বেহাল দশা। সুস্থ কোনো মানুষ এখানে আসতে পারবে না। এখানে এলে নাকে যেমন দুর্গন্ধ লাগে, তেমন দাঁড়ানোর মতো জায়গা পাওয়া যায় না। পানির জন্য কাপড় হাঁটুর ওপরে তুলে যাতায়াত করতে হয়।
শান্তিনগর এলাকার সোনিয়া বেগম বলেন, ‘পৌরসভার পাশেই বাজারটি অবস্থিত। অথচ দীর্ঘদিন এর কোনো সংস্কার হয় না। মার্কেটের ভবনগুলোর যে অবস্থা যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে।’
মিঠুন নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘বাজারের দুরবস্থার কারণে সব ক্রেতা আসতে চান না। ড্রেন থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এখানে পানি, ওখানে কাদা-ক্রেতা আসবে কেমন করে। পৌরসভা কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না। তাহলে আমরা কীভাবে ব্যবসা করব?’
আরেক ব্যবসায়ী আবদুল হাকিম বলেন, ৩০ বছরের বেশি সময় আগে বাজারটি নির্মাণ করা হয়েছিল। বর্তমানে ভবনের অবস্থা খুবই খারাপ। কখন যে দুর্ঘটনা ঘটবে বলা যাচ্ছে না। আমাদের ভাড়া আগে যা ছিল তার তিন গুণ করা হয়েছে। কিন্তু মার্কেটের উন্নয়নে কোনো কাজ হচ্ছে না।
জয়পুরহাট পৌর প্রশাসক সবুর আলী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বাজারটি সংস্কার না হওয়ায় মানুষের চরম দুর্ভোগ হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ বাজার সংস্কার টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। দ্রুত ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি করে কাজ শুরু করা হবে।’
জানা যায়, শহরবাসীর বাজারসদাই কেনাবেচার সুবিধার্থে জয়পুরহাট পৌরসভার পাশেই স্থাপিত মাছুয়া বাজারকে আধুনিকায়ন করা হয় ১৯৯৪ সালে। মাছ-মাংস, হাঁস-মুরগি, স্টেশনারি ও তরকারিসহ যাবতীয় নিত্যপণ্য বিক্রির জন্য নির্মাণ করা হয় পাকাসহ কয়েকটি টিনশেড ভবন। পুরো বাজারের মেঝেসহ পানি নিষ্কাশনে ড্রেনেজ ব্যবস্থাও করা হয়। বর্তমানে পাকা ভবন ও টিনশেডগুলো হয়ে পড়েছে ঝুঁকিপূর্ণ। খুলে পড়ছে পলেস্তারা। ছাদ, দেয়াল ও শেডের থাম্বাগুলোর রড বের হয়ে গেছে। বিভিন্ন অংশে দেখা দিয়েছে ফাটল। টিনগুলোতে মরিচা ধরেছে। ড্রেনে ময়লা জমে বন্ধ হয়ে গেছে পানি নিষ্কাশন পথ। সামান্য বৃষ্টিতেই বাজারের গলিগুলোতে পানি জমে যায়। নানান দুর্ভোগের শিকার হন ক্রেতা-বিক্রেতারা।