দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে নিখোঁজের একদিন পর পরশ সাহা (৪) নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। দুর্বৃত্তরা তার চোখ তুলে ফেলে। এ ঘটনায় পুলিশ সাতজনকে আটক করেছে। যে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পুলিশ সজাগ রয়েছে।
নিহত শিশু পরশ সাহা ঘোড়াঘাট পৌর শহরের কাদিমনগর গ্রামের কেশব সাহার পুত্র।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় কেতাব মোড় বড় কবরস্থান সংলগ্ন আমবাগান থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় পুলিশ আটক করেছে, ঘোড়াঘাট পৌরসভার কাদিমনগর এলাকার ইয়াহিয়ার পুত্র মো. জিল্লুর রহমান (২০), তার স্ত্রী মোছা. শেফালী (৪৮), মো. কামাল হোসেনের পুত্র মো. মামুন (২১), মো. জাহিদুল ইসলামের পুত্র মো. ইব্রাহিম (১৯), মৃত আব্দুর রাজ্জাকের পুত্র মো. কামাল হোসেন (২১), আবু তাহেরের পুত্র মো. সাগর (১৯), মো. ফেরদৌসের স্ত্রী নুর বানু (৪৫)।
এ দিকে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী সন্দেহভাজন একই এলাকার গৌতম, আবু তালেব ও বুলেটসহ ৬টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করেছে।
নিহত শিশুর পিতা কেশব সাহা জানান, 'বিকেল ৫টায় পরশ সাহাকে না পেয়ে সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ করা হয়। এরপর সন্ধ্যায় মাইকিং করে তার সন্ধান চাওয়া হয়। সন্ধ্যায় প্রতিবেশী জিল্লুরের সাথে তাকে যেতে দেখেছেন বলে এলাকার অনেক লোকজন আমাকে জানায়। বিষয়টি আমি তাৎক্ষণিক পুলিশকে অবহিত করি এবং সন্দেহভাজন সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি।'
এলাকাবাসীরা জানায়, ঘোড়াঘাট পৌরসভায় কাদিমনগর গ্রামের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী কেশব সাহার শিশুপুত্র পরশকে গত বুধবার পুজা চলাকালীন কালিমন্দির থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে অপহৃত শিশুর অভিভাবকগণ অনেক খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে পুলিশকে অবহিত করে। পরের দিন বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয়রা অপহৃত শিশুর লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষনিক জানায়। শিশু পরশের লাশ উদ্ধারের পর বিক্ষিপ্ত জনতা সন্দেহভাজন অপহরণকারীদের ৬টি বাড়িতে অগ্নি সংযোগ ও ভাংচুর করে। খবর পেয়ে ফুলবাড়ী ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে।
ঘোড়াঘাট থানার এসআই মো. দুলাল হোসেন জানান, বুধবার বিকেলে শিশুটি খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। সম্ভাব্য সকল স্থানে খোজ করে না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে কেতাব মোড় বড় কবরস্থান সংলগ্ন আমবাগানে স্থানীয় কৃষকেরা শিশুটির লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে সংবাদ দেয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. রোকসানা বেগম, জেলা পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমীন প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ঘোড়াঘাট থানার ওসি মো. নুরুজ্জামান চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় রাতেই আমরা সাড়াশি অভিযান চালিয়ে সাতজনকে আটক করি। কিন্তু এর বাইরে সন্দেহভাজন আরও দুই জনকে আমরা আটক করতে পারিনি। তাদেরকে আটক করতে পারলে হয়তো শিশুটিকে জীবিত উদ্ধার করা যেত। আমরা হত্যার মূল রহস্য উদঘাটনে কাজ করে যাচ্ছি। দ্রুত প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা হবে। প্রকৃত খুনিকে তার সাজা পেতে হবেই। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে ও শান্ত রয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/১২ নভেম্বর ২০১৫/ এস আহমেদ