নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের গুতিয়াব এলাকায় ৫০ বছরের বিধবা হোসনে আরা বেগম অজ্ঞাত রোগে ৩০ বছর ধরে ভুগছেন। অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত ওই নারী স্থানীয় মৃত আজুর উদ্দিনের স্ত্রী।
রবিবার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় হতে ভিজিএফের ত্রাণ নিতে এলে কথা হয় হোসনে আরা বেগমের সঙ্গে। এ সময় হোসনে আরা বেগমের রোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, প্রায় ৩০ বছর আগে জ্বর হয়ে প্রায় ২০ থেকে ২৫ দিন ভুগেছিলেন। ওই সময় জ্বর সারার পর থেকেই সারা শরীরে চুলকাতো। এরপর ছোট ছোট গোটা হতে শুরু করে। তখন তার স্বামী আজুর উদ্দিন স্থানীয় চিকিৎসক দেখালেও এর কোন ফলাফল পাওয়া যায়নি। আজুর উদ্দিন শিমুলিয়া এলাকার বসতবাড়িটিও বিক্রি করে দেন স্ত্রী হোসনে আরা বেগমের জন্য। কিন্তু লাভ হয়নি। টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসার জন্য যেতে পারেননি কোথাও। পুরো শরীরে টিউমারের মতো হয়ে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। চোখ দু'টোও দেখা যায় না। প্রকাশ্যে ঘুরে-বেড়াতেও পারছেন না তিনি। তাকে দেখলে অনেকেই ভয় পায়। এমনকি নিজের স্বজনরাও কাছে আসে না। একমাত্র ছেলে সাইফুল ইসলাম হোসনে আরাকে ভরণ-পোষণ দিচ্ছেন না।
গত ১৫ বছর আগে স্বামী আজুর উদ্দিন মারা যাওয়ার পর থেকে অনাহারে-অর্ধাহারে কাটাতে হয় হোসনে আরাকে। স্বামী মারা গেলে বাপের বাড়ি গুতিয়াবতে আশ্রয় নেন তিনি। এখন ভাইদের বাড়িতে এক কোনে ছাপড়া ঘরে বসবাস করেন তিনি। অজ্ঞাত রোগের কারণে পুত্রবধূ ও নাতিনরা কাছে আসে না। এভাবেই জীবনের সঙ্গে অবিরাম সংগ্রাম করে যাচ্ছেন এ নারী।
রোগের বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার জাইদুল ইসলাম বলেন, হোসনে আরা বেগমের রোগটি শনাক্ত করা যায়নি। এটি টিউমার হলেও উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে জানা যাবে এটা কী ধরনের রোগ। পরিবারের ইচ্ছা থাকলে উন্নত চিকিৎসা বিষয়ে উপরের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলবেন বলে জানান তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ