শরীয়তপুর সদর উপজেলার আটিপাড়া গ্রামে নারগিস আক্তার (২৭) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ, তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। সে ওই গ্রামের মনির হোসেন দেওয়ানের স্ত্রী। শনিবার সকালে পুলিশ মনির হোসেনের বসত ঘরে ঝুলে থাকা অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানা সূত্র জানায়, নড়িয়া উপজেলার চান্দনী গ্রামের রমিজ উদ্দিন মোল্যার মেয়ে নারগিস আক্তার। আট বছর আগে সদর উপজেলার আটিপাড়া গ্রামের আমির হোসেন দেওয়ানের ছেলে মানির হোসেন দেওয়ানের সাথে তার বিয়ে হয়। নারগিস ও মনির দম্পত্তির সাত ও তিন বছর বয়সি দুই মেয়ে রয়েছে। মনির রাজমিস্ত্রীর সহকারি হিসেবে কাজ করত। তার আয়ে সংসার চলত না। সে নেশাগ্রস্থ ছিল। প্রায়ই শশুর বাড়ি থেকে স্ত্রীকে টাকা এনে দেয়ার জন্য চাপ দিত। টাকা দিতে রাজি না হলে নারগিসকে মারধর করা হত। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকত। শনিবার সকালে মনির হোসেনের বসত ঘরে নারগিসের দেহ ঝুলতে দেখে প্রতিবেশিরা থানায় খবর দেয়। ততক্ষণে মনির হোসেন, তার বাবা আমীর হোসেন, মা সুফিয়া বেগম নারগিসের মেয়ে কাজল রেখাকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
নারগিসের বাবা রমিজ উদ্দিন বলেন, মনির হোসেন টাকার জন্য প্রায়ই আমার মেয়েকে মারধর করত। মেয়ের সুখের কথা বিবেচনা করে কয়েক দফায় তাকে টাকা দিয়েছি। তারপরও পার্যন্ত আমার মেয়েটিকে বাঁচতে দিলনা।
নারগিসের মা রাহিমন বেগম বলেন, টাকার জন্য মনির আমার মেয়েকে অনেকবার মারধর করেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় কয়েকবার সালিস-বৈঠক হয়েছে। মেয়ের সংসার ভেঙ্গে যাবে এ কথা চিন্তা করে আমরা অনেক নির্যাতন সহ্য করেছিলাম। সে আমার মেয়েকে এভাবে মেরে ফেলবে ভাবতেও পরিনি।
শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান বলেন, মনির মাদকাশক্ত ছিল। সংসারে অভাবও ছিল। এসব বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হত। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, মেয়েটিকে হত্যা করা হতে পারে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে। মেয়েটির বাবা হত্যার অভিযোগ এনে একটি মামলার আবেদন করেছেন। মামলটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মনির তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পালিয়ে গেছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার