দুই হাতের কব্জির সাহায্যে লিখে এবছর এইচএসসির বাংলা প্রথম পরীক্ষা দিয়েছে শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহ আলম। তার হাত দু'টির নেই কোন আঙ্গুল। তাই দু‘হাতের কব্জির সাহায্যে লিখে প্রাথমিক, জেএসসি, এসএসসির গণ্ডি পেরিয়ে এবার বাণিজ্য বিভাগ থেকে এইচএসসি পাশের স্বপ্ন আঁকছে শাহ আলম।
রবিবার সকালে হাতীবান্ধা মহিলা ডিগ্রী কলেজের ২০১ নং কক্ষে শাহ আলম দু‘হাতের কব্জির সাহায্যে লিখে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।
সে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পূর্ব বিছনদই গ্রামের বর্গাচাষী কৃষক একরামুল ও মা মরিয়ম বেগমের ছেলে।
অভাব অনটনের মাঝেই ছেলেকে পড়াশুনা করাচ্ছেন তারা। ভবিষ্যতে পড়াশোনার খরচ জোগাতে-শঙ্কা কাটছে না তাদের।
শারীরিক প্রতিবন্ধী শাহ আলম জানায়, জন্মের এক বছরের মাথায় মাটিতে হামাগুড়ি দিতে গিয়ে উঠোনের চুলার আগুনে তার দু‘হাত পুড়ে যায়। এরপর সংসারের অভাব অনটনের কারণে কৃষক বাবা একরামুল ভালমতো চিকিৎসা করতে না পারায় দুই হাতের সবগুলো আঙ্গুলে হারাতে হয় তাকে। কিন্তু আঙ্গুল হারালেও ছোট্ট বয়স থেকে পড়াশোনার আগ্রহ হারায়নি সে। আর তাই মনের অদম্য বাসনা নিয়ে প্রাইমারির গণ্ডি পেরিয়ে কৃতিত্বের সাথে এবছর বাণিজ্য বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।
তার বাবা একরামুল জানায়, তিন ছেলে আর দুই মেয়ে নিয়ে ৭ সদস্যের পরিবার তাঁর। বড় ছেলে শাহীনুর পড়ছে রংপুর কারমাইকেল কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে। বাকিরা সবাই পড়াশোনা করলেও তাদের খরচ যোগানো প্রায় অসাধ্য হয়ে পড়ে।
এসময় পরীক্ষার হলে দায়িত্বরত শিক্ষক জাহিনুর ইসলাম বলেন, ওই পরীক্ষার্থী কব্জির সাহায্যে লিখছে। তার লেখাগুলো চমৎকার। এতদিন পত্রিকায় দেখেছি আজ বাস্তবে দেখছি।
হাতীবান্ধা মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ও পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব মোতাহার হোসেন লাভলু বলেন, একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। প্রতিবন্ধতার কারণে তাকে পরীক্ষায় ৩০ মিনিট বেশি সময় দেওয়া হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/০২ এপ্রিল, ২০১৭/মাহবুব