দুঃসহ গরমে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে পটুয়াখালীর কলাপাড়াসহ সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার জনজীবন। সকাল থেকে শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত একাধিকবার চলে লোডশেডিং। শহরে মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ আসলেও গ্রামের অবস্থা আরো ভয়াবহ। সারাদিনে দুই থেকে তিন ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ পাচ্ছেনা এলাকাবাসী।
কোন কোন এলাকায় এক ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকছেনা এমন অভিযোগ গ্রাহকদের। তাদের আরো আভিযোগ, যখন বিদ্যুৎ থাকেনা তখন কলাপাড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির হট লইনের সেল ফোন ব্যস্ত করে রাখা হয়। আবার রিসিভ করলেও দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে। তাপদাহ যত তীব্র হয়, বিদ্যুতের লোডশেডিং যেন ততই পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে। দিনে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী লোডশেডিং দিয়ে শুরু হয় প্রথম ধাপ। সন্ধ্যার পরে দ্বিতীয় ধাপে গভীর রাত পর্যন্ত চলতে থাকে বিদ্যুত দেয়া নেয়ার খেলা।
ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে বিদ্যুৎ সংকটের ফলে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে ছোট-বড় কলকারখানাসহ বিদ্যুৎ নির্ভরশীল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া, অফিসিয়াল কার্যক্রমসহ হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা হচ্ছে চরমভাবে ব্যহত। বিদ্যুতের এমন ভেলকিবাজিতে অনেকেই তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। বিশেষ করে মৎস্য বন্দর মহিপুর, আলীপুরের বরফকল মালিকরা বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে ব্যাপক অর্থ লোকসান দিচ্ছেন।
কলাপাড়া পৌর শহরের গ্রাহক রাসেল কবির বলেন, আকাশে বিদ্যুৎ চমকালে কিংবা একটু বাতাসের চাপ থাকলেই বিদ্যুৎ চলে যায়। বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ফলে পানির সংকট দেখা দেয়।
সংবাদকর্মী সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ এর কলাপাড়া জোনের প্রায় ২৬ হাজার গ্রাহকের জনজীবনসহ ব্যবসা-বানিজ্য পড়েছে বিপর্যয়ের মুখে।
কলাপাড়া হাসপাতালের চিকিৎসক জুনায়েদ খান লেলিন বলেন, তীব্র গরমে ঝরসহ নিউমোনিয়া, টাইফয়েযে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে শিশুদের চিকিৎসাসেবা ব্যহত হচ্ছে সর্বোচ্চ মাত্রায়। শিশুদের দিনে তিনবার নেবুলাইজ করার প্রয়োজন হলেও তা দেয়া যাচ্ছেনা।
কলাপাড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজি এম সুবেদ কুমার সরকার জানান, ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুতের বিপরীতে ৩ থেকে সাড়ে তিন মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। তবে তিনি বলেন, জেনারেশন বৃদ্ধি ও জাতীয় গ্রীডের টাওয়ারের কাজ শেষ হলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।
বিডি প্রতিদিন/১৯ মে ২০১৭/হিমেল