পার্বত্যাঞ্চলে জুম্মজাতি ধ্বংসের ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা।
আজ শনিবার দুপুর ১২টায় রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট চত্বরে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ছাত্র জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সন্তু লারমা বলেন, ১৯৬০ সালেও কাপ্তাই বাঁধের মাধ্যমে পার্বত্যাঞ্চলে জুম্ম জাতিগোষ্ঠীর সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও শাসনতান্ত্রিক ধ্বংস করা হয়ে ছিল। বর্তমানেও সরকার জুম্ম জাতির গণতান্ত্রির দাবি ও আন্দোলনকে উপেক্ষা করে স্বৈরাচারী গণবিরোধী কায়দায় দমন-পীড়ন শুরু করেছে। তাই পাহাড়ের পরিস্থিতি আবারও জটিল ও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এছাড়া চুক্তি বিরোধীরা নানা ষড়যন্ত্র বিস্তার করে জুম্ম জনগণের জীবনে সংকটময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ইস্পাত কঠিন আন্দোলন সংগঠিত করার রক্ষ্যে যুব ও ছাত্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি বাচ্চু চাকমার সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন, এম এন লারমা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক বিজয় কেতন চাকমা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বসুমিত্র চাকাম, সহকারী অধ্যাপক মাঈনউদ্দীন মাহিম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক ড. আমিরুল ইসলাম কনক, ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি জিএম জিলানি ও যুব সমিতির সভাপতি টোয়েন চাকমা, সামজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রুন্টের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন প্রিন্স প্রমুখ।
সন্তু লারমা আরও বলেন, পার্বত্যাঞ্চলে বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে সেনা শাসন চলছে। তার সাথে যুক্ত আছে সরকার। সরকার ও তার মন্ত্রী পরিষদের নেত্রীতে পার্বত্যাঞ্চলে নিয়জিত সেনাবাহিনীর ইচ্ছা অনিচ্ছার উপর ভর করে শাসন চলছে।
তিনি বলেন, ‘অপারেশন উত্তরণ’ নামে সরকারের বিভিন্ন স্তরের প্রশাসনিক শাসনসহ বহুমুখী শাসনব্যবস্থার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে সুশাসন ব্যাহত হচ্ছে। এতে পার্বত্য চট্টগ্রামের শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে না চুক্তির আলোকে প্রণীত আইন ও বিশেষ শাসনব্যবস্থা। তাছাড়া এখানে সরকারের বিভিন্ন প্রশাসনিক স্তর যার যার মতো শাসন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
এ আগে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কার্যালয় থেকে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট চত্বরে ছাত্র জনসমাবেশে মিলিত হয়।
বিডি প্রতিদিন/২০ মে ২০১৭/এনায়েত করিম