সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী দমদমা পাকা সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে খানা-খন্দের সৃষ্টির হয়েছে। এতে করে ওই অঞ্চলের মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি কলারোয়া-দমদমা হয়ে সোনাবাড়িয়া থেকে সরাসরি পশ্চিমে সীমান্তবর্তী চন্দনপুর-চান্দুড়িয়া অভিমুখী। সোনাবাড়িয়া, চন্দনপুর, হেলাতলা, কেঁড়াগাছি, লাঙ্গলঝাড়া, কেরালকাতা-এই ৬ ইউনিয়নের মানুষের একটি অন্যতম প্রধান রুট হলো এই সড়কটি। চলতি মৌসুমি জলবায়ুর প্রভাবে সৃষ্ট ভারি ও মাঝারি বৃষ্টিতে কলারোয়া-দমদমা সড়কটির বিভিন্ন স্থানের কার্পেটিং উঠে এখন যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পানি-কাদা, খানা-খন্দকে পাকা সড়কটির এখন মুমূর্ষু প্রায় অবস্থা। এতে প্রায় ছোট-ছোট দুর্ঘটনার কথা শোনা যায়। পণ্যবাহী ভারি যানবাহন চলাচল করায় ভাঙনকবলিত এ সড়কের গর্তগুলো ক্রমশ বিস্তৃত ও গভীর হচ্ছে। ছোট কোনো যানবাহনের চাকা এই গর্তে পড়লে উল্টে যাচ্ছে। আরও বড় গাড়ির চাকাও এসব গর্তে পড়লে বিশেষ কোনো ব্যবস্থা ছাড়া উঠছে না। বৃষ্টি চলমান থাকায় প্রতিদিনই ভাঙছে সড়ক। ছোট ছোট গর্তগুলো বড় আকার নিচ্ছে প্রতিনিয়ত। লোহাকুড়ায় অবস্থিত হোমিওপ্যাথিক কলেজের পশ্চিম-উত্তর অংশে সড়কটির ভাঙন এতটাই ভয়াবহ যে, চোখে না দেখলে তা অনুমান করা দুরূহ। গর্ত, কাদা-পানিতে সড়কটি একাকার হয়ে গেছে। অথচ এই সড়কে প্রতিদিন শতশত হাল্কা ও ভারি যানবাহন চলাচল করে। ভাঙনকবলিত স্থানে দুই পার্শ্বে যানবাহনের সারি পড়ে যায় মাঝে মধ্যে। পাশাপাশি সাইড দিতে পারে না যানবাহনের চালকেরা।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে সড়কটি ঘুরে আরও দেখা যায়, ভাঙন শুরু মূলত কলারোয়া পৌরসভার তুলসীডাঙ্গা হাতিভাঙা নামক কালভার্ট থেকে। এরপর কদম আলি মেস হয়ে পৌরসভার শেষ সীমা কানিপাড়া পর্যন্ত সড়কটিতে অসংখ্য ভাঙন। প্রতিটি ভাঙা স্থান পানিতে টইটম্বুর। দূর থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে, পানিপূর্ণ কোনো গর্ত কত গভীর। বর্তমানে সড়কের যে অবস্থা তাকে এই পথ দিয়ে চলাচল করা দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই অঞ্চলের মানুষের।
পৌরসভা এলাকা শেষে শুরু লোহাকুড়া গ্রাম। সাময়িক ভালো রাস্তা চোখে পড়লেও হোমিওপ্যাাথিক কলেজ পার হওয়ার পর পথ চলাচলে শুরু হয় এক দুর্বিষহ দুর্ভোগ। এরপর দাউদের মোড় নামক স্থানের যাত্রী ছাউনি থেকে কিছুদূর ফের ভালো রাস্তা চোখে পড়লেও আবার রাস্তার বেহাল দশা শুরু একটি ইট ভাটা সংলগ্ন স্থান থেকে। পাকা রাস্তাটি যে শুধু ভাঙা ও গর্ত তা নয়, সেই সাথে মারাত্মক পিচ্ছিলও বটে। পরে কিছুটা পথ ভালো হলে সোনাবাড়িয়া-রামকৃষ্ণপুরের মাঝে স্থাপিত ইট ভাটার কারণে ভাটা সংলগ্ন সড়কটি কর্দমাক্ত ও পিচ্ছিল থাকে বৃষ্টি হলেই।
ভুক্তভোগীরা জানান, ইতোমধ্যে বর্ষা মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। তবে প্রায় ৪ কি.মি. দীর্ঘ কলারোয়া-দমদমা সড়কটি যদি সংস্কার করা না হয়, তবে তা আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে। পথ চলাচল হয়ে পড়বে দুর্গম, দুঃসাধ্য। সকলেই চাইছেন, জরুরি ভিত্তিতে এলজিইডি’র প্রকৌশল বিভাগ পদক্ষেপ নিয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটির মেরামত কাজ শুরু করে দিক। তা না হলে এই সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়তে পারে বলে তাদের আশঙ্কা।
এ বিষয়ে জানার জন্য মুঠোফোনে কলারোয়া উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে একই বিষয়ে শনিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার রায়ের সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, রাস্তাটি তিনি সরেজমিনে পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন।
বিডি-প্রতিদিন/০৮ জুলাই, ২০১৭/মাহবুব