বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সাহেববাড়ি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে বাঁধটির প্রায় দেড় থেকে দুইশ’ মিটার বাঙালি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। একইসঙ্গে বাঁধের উক্ত স্থানে আশ্রয় নেয়া বেশ কয়েকটি বসতবাড়িও নদীগর্ভে চলে গেছে।
বাঁধের ক্ষতিগ্রস্থ অবশিষ্ট অংশও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যে কোন সময় বাঁধটি পুরোপুরি ভেঙ্গে গেলে বগুড়ার শেরপুর, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ও রায়গঞ্জ উপজেলার হাজার হাজার একর ফসলি জমিসহ শতশত বসতবাড়ি মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।
জানা যায়, শেরপুর-ধুনট অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যার কবল থেকে রক্ষার লক্ষ্যে ৯০-এর দশকে বাঙালি নদীর বথুয়াবাড়ি থেকে কল্যাণী পর্যন্ত প্রায় ১০কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়। একইসঙ্গে বাঙালি এবং করতোয়া হয়ে বন্যার পানি যেন রায়গঞ্জ ও তাড়াশ এলাকায় প্রবেশ করতে না পেরে সে জন্য শেরপুর উপজেলার মির্জাপুরের কুর্ণিঘাট থেকে সীমবাড়ী পর্যন্ত আলাদা বাঁধ গড়ে তোলা হয়।
সেই বাঁধের সাহেববাড়ি অংশে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে বাঙালি নদীর পানি বাড়ছে। গত তিনদিনে শেরপুরের সুঘাট ইউনিয়নের সাহেববাড়ি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দেড় থেকে দুইশ’ মিটার বাঙালি নদী গর্ভে ধসে গেছে। পাশাপাশি বাঁধের উক্ত স্থানে আশ্রয় নেয়া ছামেনা বেওয়া, মাসুদ রানা, আব্দুল্লাহ শেখ, মোজাম্মেল হক ও রহিম মিয়ার বসতবাড়িও নদীগর্ভে চলে গেছে। অন্যের জমিতে অস্থায়ী ঘর বানিয়ে বসবাস করছেন তারা।
বাঁধ এলাকার বাসিন্দা আব্দুল গফুর, মোকছেদ আলী, মোজাম্মেল হক, রাফিয়া বেগম, আব্দুল করিমসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, বিগত কয়েক বছর বাঁধটির সংস্কার ও মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ইতিমধ্যে বাঁধের ২০০মিটার ধসে গেছে। বাঁধটি ভেঙে গেলে হাজার হাজার একর ফসলি জমি ও শতশত বসত বাড়ি বন্যার পানিতে তলিয়ে যাবে বলে তারা জানান।
বগুড়ার শেরপুরের সুঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ জানান, ইতিমধ্যেই বাঁধ ধসে যাওয়া এবং ৩-৪টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলিন হওয়ার বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাঁধটি সংস্কার করার জন্য দাবি জানান এই ইউপি চেয়ারম্যান।
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, বাঁধে ধস ও বসতবাড়ি নদীগর্ভে যাওয়ার খবর শুনেছি। সেখানে সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে এই কর্মকর্তা দাবি করেন।
বিডি প্রতিদিন/ ০৯ জুলাই, ২০১৭/ ই- জাহান