জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের অর্থ সম্পাদক আব্দুল মান্নান খুনের ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন দুইজনকে আটক করেছে। আসামীরা যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সে জন্য সীমান্তে রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ভোর রাতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়েছে বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেওয়ান মোহাম্মদ লালন আহম্মেদ নিশ্চিত করেছেন।
আটককৃতরা হলেন খুনের সাথে সরাসরি জড়িত যুবলীগ নেতা সজিব দত্তের ভাই পিন্টু দত্ত (৩৫) ও পৌর ১০ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শান্ত (৩০)।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন আগে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজিব দত্তের সাথে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মান্নানের সাথে সিগারেট খাওয়াকে কেন্দ্র করে হাতাহাতি হয়। এ সময় যুবলীগ নেতা সজিব দত্ত মান্নানকে পরে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
পরবর্তীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা আব্দুল মান্নান সজিব দত্তের বড় ভাই জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দত্তকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি তার ভাইয়ের পক্ষ নিয়ে কথা বলে মান্নানকে শাসিয়ে সাবধান করে দেন বলে ওই সময় উপস্থিত অনেকে বলেছেন।
ওই ঘটনার জের ধরে যুবলীগ নেতা সজিব দত্ত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টায় আব্দুল মান্নানকে শহরের মুন্সিরহাট এলাকায় দেখতে পেলে পেছন থেকে ধারালো অস্ত্র গিয়ে আঘাত করতে থাকে। এক পর্যায়ে মান্নান মাটিতে লুটিয়ে যায়। এ সময় আব্দুল মান্নানকে বাচাঁনোর জন্য এগিয়ে এলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জুম্মনকে সজিব দত্ত ছুরিকাঘাত করে মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয় লোকজন আব্দুল মান্নান ও জুম্মনকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে আনার পথে মান্নান অতিরিক্ত রক্তক্ষণের কারণে পথিমধ্যে মারা যায়। আর জুম্মনকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
রাত ২টার দিকে জুম্মনের অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুব্রত রায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করেন।
তাৎক্ষনিকভাবে হাসপাতালে জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল ও পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ হতাহতের খোঁজ নিতে গিয়ে ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের আশ্বাস প্রদান করেন।
পরবর্তীতে পুলিশের বিশেষ অভিযানে সন্দেহজনক পিন্টু (৩৫) ও শান্ত (৩০) নামে দুই জনকে আটক করে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি শাকিল চৌধুরী অবিলম্বে খুনের ঘটনার সাথে জড়িত যুবলীগ নেতা ও তার সহযোগিদের গ্রেফতারের দাবি জানান।
এই খুনের সাথে জড়িতের অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা সজিব দত্তের বড় ভাই জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দত্ত সমীর পলাতক রয়েছেন।
সমীর দত্তের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ জানান, খুনের সাথে জড়িতদের পুলিশ চিহ্নিত করেছেন। দোষীদের গ্রেফতারের জন্য বিশেষ অভিযান চলছে। আসামীরা যেন না পালাতে পারে তাই সীমান্তে রেড এলার্ড জারি করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/১২ জুলাই, ২০১৭/ফারজানা