বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সারা দেশের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের ‘ত্যাগী-প্রবীন ও অসুস্থ’ নেতা-কর্মীদের নামের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এই তালিকা দলটির সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ দলীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দিন ধরে কিছু পাওয়ার আশা না করেই আওয়ামী লীগ বা অঙ্গ সংগঠনের জন্য সময়, অর্থসহ বিভিন্ন কিছু ব্যয় করেছেন এমন বহু নেতাকর্মী রয়েছে দেশে বৃহত্তর এই রাজনৈতিক দলে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পরে দলের অনেক নেতাকর্মীকে অমানুষিক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ ওই সকল ত্যাগী নেতাকর্মীদের সাংগঠনিকভাবে মূল্যায়ন করার জন্য তাদের নাম-ঠিকানা চেয়ে দলের জেলা, উপজেলা ও পৌর কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। গত ৩ জুলাই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপির স্বাক্ষরিত এই পত্রটি পাঠানো হয়। দলের এই নির্দেশ পাওয়ায় ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, গত দুই দিন আগে আমি এই সংক্রান্ত পত্র পেয়েছি। বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে তৃণমূলের ত্যাগী নেতাদের জন্য। সুবল সাহা আরো বলেন, আমি ইতিমধ্যে দলের উপজেলা পর্যায়ের বেশ কয়েকজন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সাথে কথা বলেছি । তারাও এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছে। আমরা চেষ্টা করবো দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দ্রুত এই ত্যাগী নেতাদের তালিকা কেন্দ্রীয় সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে পাঠানোর জন্য।
অপরদিকে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন এ বিষয়ে জানান, গত ২০ মে গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি সকল সাংগঠনিক শাখা কমিটির কাছে ‘ত্যাগী, দুঃস্থ ও নির্যাতিত’ নেতাকর্মীদের তালিকা তৈরির নির্দেশনা পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, ফরিদপুর জেলা এখনো আওয়ামী লীগের পূর্নাঙ্গ কমিটি হয়নি, তাই দলের সভাপতির সাথে আলাপ করে সঠিক এবং ত্যাগী ও দলের দুর্দিনের সাথী ভাইদের তালিকা প্রস্তুত করবো। যা সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে পাঠিয়ে দিবো। তিনি আশা রেখে বলেন, এবার হয়তো ওই সকল ত্যাগী কর্মী বা নেতাদের সঠিক মূল্যায়ন করবে দল।
দলের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এম মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়া জানান, একটু দেরী হলেও এই সিদ্ধান্তটা খুবই ভাল হয়েছে। কারণ হিসাবে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন যারা দলটি করেছে তাদের কাছে এটা অনেক বড় প্রাপ্তি হবে যে, তাদের নাম তালিকা সভাপতির দরবারে রয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই ক্ষেত্রে নতুন প্রজন্ম আওয়ামী লীগের ছায়া তলে আসতে উৎসাহিত হবে। ‘ত্যাগী, অসহায় ও অসুস্থ’ নেতাকর্মীদের তালিকা তৈরী প্রসঙ্গে আলফাডাঙ্গা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও সাবেক ছাত্র নেতা আরিফুর রহমান দোলন বলেন, অবশ্যই এই উদ্যোগ দলের জন্য ভাল। এতে করে দলের ভেতরে ত্যাগী কর্মী ও নেতা সৃষ্টি হবে। কর্মীরা সংগঠনের প্রতি আন্তরিক হবেন।
বিডি প্রতিদিন/১২ জুলাই ২০১৭/হিমেল