বগুড়ার সারিয়াকান্দি পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অনন্ত শ্রাবণ বিশুর ভাড়া করা বাড়িতেই ছাত্র নাঈম ইসলামকে (২০) গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করার পর আদালতের কাছে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার আসল ঘটনা জানা যাবে।
এদিকে রবিবার রাতে বিশুর ভাড়া বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে শোবার ঘর ও পাশের একটি ঘরের তালা ভেঙে সেখান থেকে নিহত নাঈম ইসলামের জুতা, মানিব্যাগ, আইডি কার্ড, রক্তমাখা ছুরি, দুটি রামদা, দুটি চাকু, রক্তাক্ত বালিশ, কম্বল, চাদর ও রক্ত মোছার কাপড় উদ্ধার করেছে। সেই ঘরের মেঝে খোঁড়া ও প্রচুর রক্তের দাগ পেয়েছে পুলিশ সদস্যরা।
সারিয়াকান্দি পুলিশ জানায়, নিহত নাঈম বগুড়ার গাবতলী উপজেলার মরিয়া গোলাবাড়ি গ্রামের স্বর্ণ ব্যবসায়ী ইন্তেজার রহমানের ছেলে। সে বগুড়া শহরে বেসরকারি পলিটেকনিক বিটে ডিপ্লোমা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ বর্ষের ছাত্র ছিল। ১৫ নভেম্বর সকালে ফোন পেয়ে সে বাড়ি থেকে বের হয়। ১৬ নভেম্বর সকালে সারিয়াকান্দি বাজারে তার গলাকাটা ও বিকৃত লাশ পাওয়া যায়।
পুলিশ আরও জানায়, এই ঘটনায় রাতেই ছয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন নাঈমের মা নাজমা বেগম। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একই দিনে পাঁচ জনকে আটক করে।
সারিয়াকান্দি থানার ওসি আল-আমিন জানান, উপজেলার বাড়ইপাড়ার কান্টু মোল্লার ছেলে পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অনন্ত শ্রাবণ বিশু বাজার এলাকায় সন্তোষ খলিফার বাড়িতে ভাড়া থাকত। রবিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে ওই বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। বিশুর শোবার ঘর ও পাশের একটি ঘরের তালা ভেঙে সেখান থেকে নিহত নাঈম ইসলামের জুতা, মানিব্যাগ, শিক্ষা আইডি, রক্তমাখা ছুরি, দুটি রামদা, দুটি চাকু, রক্তাক্ত বালিশ, কম্বল, চাদর ও রক্ত মোছার কাপড় পাওয়া যায়।
তিনি আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে বিশুর ঘরেই নাঈমকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ গুম করতে ঘরের পাকা মেঝে খোঁড়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। পরে কোনো কারণে লাশ বাইরে নিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। এদিকে শনিবার গ্রামের একটি মাঠ থেকে নাঈমের অ্যাপাচি মোটরসাইকেল ও রক্তমাখা শার্ট উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নাঈমের মোবাইল ফোনটি এখনও পাওয়া যায়নি। গ্রেফতার ছাত্রলীগ নেতা অনন্ত শ্রাবণ বিশু, তার বন্ধু আতিকুর রহমান, সিহাব বাবু, মনিরুজ্জামান মনির ও অন্তর মিয়াকে রবিবার আদালতে হাজির করে পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। রিমান্ড মঞ্জুর হলে হত্যাকান্ডের প্রকৃত ঘটনা জানাযাবে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন