খাগড়াছড়িতে শিক্ষা প্রকৌশল ব্যুরোর ৯টি উপজেলায় কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলছে। এসব কাজের গুণগতমানসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন এলাকায় ভবনগুলোর সরেজমিন ঘুরে এসব অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ১৮-১৯ অর্থবছরে প্রায় ২০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের তদারকিতে রয়েছে একজন সহকারী প্রকৌশলী ও অপর একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী। ফলে দূর্গম এলাকার সব উন্নয়ন কাজ তদারক করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না।
খাগড়াছড়ির শিক্ষা প্রকৌশল ব্যুরোর সহকারী প্রকৌশলী বিজক চাকমা জানান, আমার অফিসে আমরা দুইজন ছাড়া কেউ নেই। তাই বিভিন্ন উপজেলায় যেসব কাজ উন্নয়ন কাজ হচ্ছে তা সঠিক ও সুষ্ঠুভাবে তদারকি করা কোনোভাবেই আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। আজ দিঘীনালার হাছিনসনপুর স্কুলে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ চলছে তাই মাটিরাঙ্গার শান্তিপুর স্কুলের কাজে যাওয়া সম্ভব নয়। একটি কাজ থেকে অন্য একটি কাজের দূরত্ব প্রায় ৫০-৬০কিমি দূরে। এ অবস্থায় ঠিকাদাররা সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের তদারকি না থাকায় কাজের গুণগতমান ঠিক রাখছে না।
সম্প্রতি এপি ব্যাটেলিয়েন হাইস্কুলে ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩য় তলা ভবন নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়ে। পরবর্তীতে স্কুল কমিটির গঠিত তদন্ত কমিটির চাপে ভবন ভেঙ্গে এখন পুনঃনির্মাণের কাজ চলছে। দূর্গম লক্ষীছড়ির বর্মাছড়ি হাইস্কুলের এখনো লেওয়ার্ট ও দেওয়া হয়নি। খাগড়াছড়ি সরকারী কলেজের একাডেমিক ভবনটিও ২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে যেনতেন ভাবে নির্মাণ হচ্ছে। একইসাথে একই কলেজে ৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ছাত্রী নিবাসটির কাজ নিয়েও নানা অনিয়মের প্রশ্ন উঠেছে। ৭৫ লাখ টাকা ছোট মেরুং বিদ্যালয়, দিঘীনালা কলেজ ভবন, কুজেন্দ্র-মল্লিকা ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবন, পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয়, শান্তিপুর ইসলামিয়া মাদ্রাসা, রানী নিহার দেবী উচ্চ বিদ্যালয় ৭১ লাখ টাকা ব্যয়, কলেজিয়েট স্কুল ৭০ লাখ টাকা ব্যয়, রামগড়ে গাণীতুল ইসলামিয়া মাদ্রাসা, একই উপজেলায় চৌধুরীপাড়া জুনিয়র হাইস্কুল ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন কাজগুলো তদারকি বলতে কিছুই নেই।
জানা গেছে, সরকার পাহাড়ের শিক্ষা-ব্যবস্থার উন্নয়নে কোটি কোটি টাকার বরাদ্দ দিয়ে উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালালেও এসব ভবনের নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম পরিলক্ষিত হওয়ায়, সুষ্ঠু তদারকি না থাকায় ভবনগুলোর ভবিষ্যত স্থায়ীত্ব নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
রাঙ্গামাটির শিক্ষা প্রকৌশল ব্যুরোর নির্বাহী প্রকৌশলী এ প্রতিবেদককে মুঠোফোনে জানান, আমাদের জনবল নেই। উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছে তা জানিয়েছি।
খাগড়াছড়িতে দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রকৌশলী বিজক কুমার চাকমা জানান, আমাদের জনবল নেই তাই কাজে অনিয়ম হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, উচ্চ পর্যায়ে সুষ্ঠু তদন্ত করা হলে এসব ভবনের আরো বহু অনিয়ম ধরা পড়বে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা