খরায় পুড়ছে পাহাড়। বাড়ছে তাপ। কমছে পানি। যৌবন হারিয়েছে কাপ্তাই হ্রদ। একেবারেই প্রাণহীন খাল, বিল ও কুপগুলো। বইছে মৃদু তাপপ্রবাহ।
রাঙামাটি আবহাওয়া অফিস বলছে, বৃষ্টি না থাকা এবং বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় গরমে তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। গরমে অস্বস্তিতে পড়েছেন পাহাড়ের মানুষ। অন্যদিকে হ্রদে পানির স্থর কমে যাওয় নৌপথে রাঙামাটি ৬টি উপজেলায় বন্ধ লঞ্চ চলাচল। যাতায়তের এখন একমাত্র উপায় ছোট নৌকা ও স্পিট বোট, কান্ট্রি বোট (ইঞ্জিন চালিত বোট)।
এদিকে যাত্রীদের উপর ‘‘মরার উপর খরার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে’’ নৌ-যানের ভাড়া। তবুও এ বিষয়ে কোন নজরদাড়ি নেই সংশ্লিষ্টদের। তাতেই ক্ষোভ বেড়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
রাঙামাটি লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি মো. মাঈনুউদ্দীন সেলিম জানান, কাপ্তাই হ্রদে বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে ব্যাপক পলি জমাট হয়। যার কারণে ভরাট হয়ে গেছে হ্রদের তলদেশ। গ্রীষ্মের সময় হ্রদের বুকে জেগে উঠে হাজারো ডুবোচর। তখন বৃহত্তর হ্রদ ছড়ায় পরিণত হয়। ঠিক এসময়টায় নৌ-পথে বড় লঞ্চগুলো চলাচল করতে পারে না। ডুবো চরে আটকা পরে।
রাঙমাটির সদরের সাথে নানিয়ারচর, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি, বরকল, ছোট হরিনা-বড় হরিনা, লংগদু ও বাঘাইছড়ি উপজেলায় লঞ্চ যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। তাই তীব্র নৌ সংকটে পরে সাধারণ ব্যবসায়ীসহ উপজেলাবাসী। তাদের বাধ্য হয়ে ছাট নৌকা ও স্পিট বোট, কান্ট্রি বোট উপর নির্ভরশীল হতে হয়। কাপ্তাই হ্রদে পানি না বাড়লে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক করা যাবে না।
অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন রাঙামাটি সদরের সাথে ৬টি উপজেলার লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকার কারণে সুযোগ বুঝে ভাড়া বাড়িয়েছে নৌ ব্যবসায়ীরা। তাদের হাতে জিন্মি হয়ে পরেছে স্থানীয় উপজেলাবাসী।
এ ব্যাপারে লংগদু উপজেলার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বাবুল ফরাজি বলেন, রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে যাওয়ার কারণে ঘাটে লঞ্চ আসছে না। তাই এ উপজেলায় ব্যবসা করা খুবই কষ্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছাট বোটগুলোর ভাড়াও দ্বিগুন। তাতে ভোগান্তি বেড়েছে স্থানীয় উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের।
অন্যদিকে একই সাথে পাল্লা দিয়ে রাঙামাটিতে বেড়েছে গ্রীষ্মের তাপমাত্রা। তীব্র তাপদাহে হাপিয়ে উয়ে উঠছে নিন্ম আয়ের মানুষগুলো। জুমের খেতে কাজ করতে পারছে পাহাড়ের অদিবাসীরা। সূর্য্যরে তাপের সাথে বেড়েছে ভেপসা গরম। অতিষ্ঠ গড়মে বাড়ছে সংষ্কট পাহাড়বাসীর। .
রাঙামাটি আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটিতে স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা বেশি। টানা দুই সপ্তাহ ধরে এ অবস্থা বিরাজ করছে। সামনে আর বৃদ্ধিপাবে এর প্রভাব। প্রায় প্রতিদিন রাঙামাটিতে সর্বোচ্চ ৩৬থেকে ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস।
এ ব্যাপারে রাঙামাটি আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপাপ্ত কর্মকর্তা কাজী হুমায়ন রশিদ বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে এ তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। বাতাসে কার্বন মনোক্সাইড পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। সাগরে একটি লঘুচাপ তৈরি হয়েছে। লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। তাই গরমের প্রভাবটা বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্ভাব্য কাল বৈশাখী ঝড়ের সর্তক সংকেত দেওয়া হয়েছে। নিম্নচাপের কারণে বাতাসের সাথে বজ্রপাতের আংশকা করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার