বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রমজানকাঠী এলাকায় মুক্তিপণের ২০ লাখ টাকা না পেয়ে দশক শ্রেণির ছাত্র ইস্রাফিল হাওলাদার নয়নকে (১৫) উপর্যপুরী কুপিয়ে এবং গলা কেটে হত্যার পর বস্তায় ভরে লাশ নদীতে ফেলে দিয়েছে দুস্কৃতিকারীরা। রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ তার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে প্রেরণ করে।
দাবিকৃত ২০ লাখ টাকার মুক্তিপণ না পেয়ে নয়নকে উপর্যপুরী কুপিয়ে এবং গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় প্রতিবেশী আশিক হাওলাদারকে (১৬) পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে নয়ন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
নিহত নয়ন পাশ্ববর্তী উজিরপুর উপজেলার বামরাইল এবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র এবং একই উপজেলার ভরসাকাঠী এলাকার সোবাহান হাওলাদারের ছেলে। তার বাবা এবং মা দুই জনেই চট্টগ্রামে গার্মেন্টে চাকরি করেন। অভিযুক্ত আশিক হাওলাদারও একই এলাকার ওসমান হাওলাদারের ছেলে।
উজিরপুরের বাসিন্দা এমদাদুল কাশেম সেন্টু জানান, নয়ন তার দাদা খালেক হাওলাদার ও ছোট বোন ফারজানা আক্তারের সাথে শনিবার বিকেলে বাড়ির পাশের কৃষি জমিতে লাল শাক তুলছিলো। এ সময় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাকে ডেকে নেয়। পরে নয়নের মুক্তিপন বাবদ তার বাবা সোবাহান হাওলাদারের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা। তাদের সাথে ১০ লাখ টাকায় ছেলের মুক্তির সমঝোতা হয় সোবাহানের। সোবাহান হাওলাদার স্থানীয় সংবাদ কর্মীদের এই তথ্য জানিয়েছেন।
ওই রাতের যে কোন সময় দুর্বৃত্তরা রমজানকাঠীর একটি পাট ক্ষেতে নিয়ে নয়নকে কুপিয়ে এবং গলাকেটে হত্যা করে। পরে একটি বস্তায় ইট ঢুকিয়ে নয়নকে বস্তার মধ্যে ভরে পাট ক্ষেত সংলগ্ন সন্ধ্যা নদীতে ফেলে দেয় তারা। রাতের যে সময় নয়নের লাশ বস্তায় ভরে নদীতে ফেলে দেওয়া হয় তখন নদীতে জোয়ার ছিলো। বস্তার মধ্যে নয়নের লাশ ফুলে উঠলে এবং নদীতে ভাটি হলে স্থানীয়রা ওই বস্তাটি দেখে পুলিশে খবর দেয়।
বাবুগঞ্জ থানার ওসি দিবাকর চন্দ্র দাস বলেন, ময়না তদন্তের জন্য তার লাশ বরিশাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।
পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম জানান, মুক্তিপণ না পেয়েই স্কুলছাত্র নয়নকে হত্যা করেছে কিশোর দুর্বৃত্তরা। এই হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যে আশিক হাওলাদার নামে এক প্রতিবেশী কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ। সে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এই ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার