ঘূর্ণিঝড় ফণী’র প্রভাবমুক্ত হয়েছে সাগরপাড়ের এ জনপদের। শুরু হওয়া দমকা বাতাস ও থেমে থেমে বৃষ্টি এখন আর নেই। টানা দুই দিনের ফণী আতংকে উপকূলের পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মানুষরা নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে।
শনিবার সকাল থেকে গৃহহীণ মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে ঘরে ফিরে গেছে।
এ উপজেলায় বড় ধরনের ক্ষয়-ক্ষতি না হলেও ছোট বড় প্রায় ৫ শতাধিক বসত ঘর ক্ষতি হয়েছে। গাছচাপা পরে মৃত্যু হয়েছে এক জনের। ঝড়ো বাতাসে শতশত গাছপালা উপড়ে পড়ে গেছে। এছাড়া বিধ্বস্ত হয়েছে বেড়িবাঁধ। তলিয়ে গেছে অসংখ্য পুকুর।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনের পূর্ব প্রস্তুতি থাকার কারণে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে গোটা উপকূলবাসী। দিনের বেলায় আশ্রয় ন্দ্রেকেগুলোতে তেমন মানুষজন না আসলেও সন্ধ্যা পর কেন্দ্রগুলো কানায় কানায় পূর্ণ ছিল।
এদিকে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়াও হোটেল মোটেলে আশ্রয় নিয়ে ছিল স্থানীয়রা। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রগুলোতে বিতরণ করা হয়েছিল শুকনো খাবার। জোয়ারের সময় নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্ন অঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। এছাড়া উপকূলীয় এলাকায় দমকা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ফণীর প্রভাবে শুক্রবার রাতে গাছ চাপায় কুয়াকাটার লতাচাপলী এলাকায় হাবিব নামে এক মোটরসাইকেল চালকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া লালুয়া ইউনিয়নের ৫ কিলোমিটার বেড়ি বাঁধ সম্পূর্ণ ও আশিংক বিধ্বস্ত হয়েছে ২ কিলোমিটার। ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ৪৬টি বসত ঘর সম্পূর্ণভাবে ও ৪৮৭টি বসত ঘর আংশিক বিধ্বস্তের খবর পাওয়া যায়।
এদিকে প্রায় ৬৫৮ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে কৃষি বিভাগ।
নিজাম শেখ জানিয়েছেন, স্বেচ্ছাসেবী হয়ে সচেতনতামূলক কাজ করতে গিয়ে তার মালিকাধীন দোকানটি অপসারণ করতে না পাড়ায় বাতাসে দোকান ঘরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হোটেল সৈকতের মালিক জিয়াউর রহমান বলেন, এ দুর্যোগকালীন আশ্রয়হীন মানুষদের আশ্রয় দিতে পেরে তিনি খুশি। নারী, শিশু ও বৃদ্ধাসহ শতাধিক মানুষদের জন্য হোটেলের রুম খুলে দিয়ে তাদের মাঝে শুকনো খাবার ও পানি সরবরাহ করা হয়েছে।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র আব্দুল বারেক মোল্লা জানান, ফণী মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা মতে দুর্যোগ ব্যবস্থা কমিটির ব্যাপক প্রস্তুতি ছিল। প্রতিটি স্কুল, কলেজ ও আবাসিক হোটেলর ভবনগুলো খুলে দেয়া হয়েছিল। আশ্রয় নেয়া মানুষগুলোকে সেবা দিতে পৌর সভার নয়টি ইউনিট একযোগে কাজ করেছেন।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর রহমান সাংবাদিকদের জানান, তিনি অধিকাংশ আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করে শুকনো খাবার বিতরণ করেছে। দুর্যোগ পরবর্তী ক্ষয়-ক্ষতির তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন