বগুড়ার শাজাহানপুরে পারিবারিক কলহের জেরে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ইনজেকশন করে নূরজাহান বেগম (৪৩) নামের এক নারীকে ধারালো ছুরি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করেছে তার স্বামী মো. শাহীন আলম। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার শাকপালা দিঘীরপাড় গ্রামে তাদের ভাড়াবাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ শাহীন আলমকে গ্রেফতার ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করেছে।
নিহত নূরজাহান বেগম জেলার দুঁপচাচিয়া উপজেলার পোথাট্টি গ্রামের মৃত সাবাজ সাকিদারের মেয়ে। এ বিষয়ে বুধবার নিহতের মা আছুবা বেওয়া শাজাহানপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। অভিযুক্ত শাহীন আলম (৩৪) ওরফে সুমন বগুড়ার সদর উপজেলার কদিমপাড়া গ্রামের মৃত দৌলত জামানের পুত্র। সে নিহত নূর জাহান বেগমের তৃতীয় স্বামী ছিলেন।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাতে ১০টার দিকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠনো হয়। শাজাহানপুর থানার ওসি মো. আজিম উদ্দীন জানান, পারিবারিক কলহের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। অভিযুক্ত শাহীন আলম তার আগের স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে গত ২২ আগস্ট নূরজাহান বেগমকে বিয়ে করেন। বিয়ের ১১ দিনের মাথায় শাহীন আলম তার স্ত্রীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ধারালো ছুরি দিয়ে কলাকেটে হত্যা করেন।
সদর সার্কেলের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে শাহীন আলমকে বগুড়া থানার পাশ থেকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। নিহতের ছেলে লিটন জানান, শাহীন আলম তার মা নূরজাহান বেগমের তৃতীয় স্বামী। তার বাবা ইনসেন আলীর সঙ্গে তার মায়ের প্রায় ২০ বছর পূর্বে ডিভোর্স হয়। এরপর তার মা শিবগঞ্জ উপজেলার লড়িয়াল গ্রামের মজিবর রহমানকে বিয়ে করেন। সেখানে প্রায় তার মা ৮ বছর সংসার করেন। পরে মজিবর রহমান মারা গেলে তার মা বগুড়া ইসলামপুর হাসান জুট মিলে শ্রমিক হিসেবে করতে শুরু করেন। সেখানে কর্মরত অবস্থায় শাহীন আলমের সঙ্গে বিয়ে হয় তার মা নূরজাহান বেগমের।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, মঙ্গলবার রাতে রক্তমাখা অবস্থায় শাহীনকে সদর থানার পাশ থেকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম (বার) জানিয়েছেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি পারিবারিক কলহের জেরে নূরজাহান বেগমকে হত্যা করা হয়েছে। তদন্তে পুরো ঘটনা জানা যাবে। শাহীন আলমকে রিমান্ডের আবেদন করবো এবং জানার চেষ্টা করবো হত্যার নেপথ্যের কারণ।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক