লক্ষ্মীপুরে ভাঙছে রহমতখালি নদী। এতে বিলীন হচ্ছে নদীকূলের বাসিন্দাদের ফসলী জমি ও ঘরবাড়ি। নদী ভাঙনের কবলে পড়ে সদরের ৫টি ইউনিয়নের প্রায় হাজারো পরিবার এখন হয়ে পড়েছেন নি:স্ব ও ভূমিহীন।
বর্তমানে ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে আরো অন্তত ৫০ হাজার পরিবার। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, ভাঙন ঠেকাতে নদীর তিনটি পয়েন্টকে চিহ্নিত করে ৩০ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
সরেজমিন সদর উপজেলার ভাঙন কবলিত রহমতখালি নদী এলাকার কালিরচর, জগৎবেড় ও চর রমনী মোহন ইউনিয়নের কয়েকটি স্থান ঘুরে দেখা গেছে নদী ভাঙনের দৃশ্য।
গত বৃহস্পতিবার জগৎবেড় এলাকায় নদীর পাড়ে অসহায়ভাবে তাকিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে এক কৃষককে। নাম তার খুরশিদ আলম। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার জগৎবেড় এলাকার বাসিন্দা তিনি। পেশায় একজন কৃষক। জানতে চাইলে এ কৃষক বলেন, নদীর পাড়ে ২৪ শতক জমি ছিল। প্রতিদিন জমিতে খেটে উপার্জিত ফসল বিক্রি করে পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার চলতো তার। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে রহমতখালির অব্যাহত ভাঙনে তার সব জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন তিনি নি:স্ব।
শুধু তারই নয় স্থানীয় তথ্যমতে এমন ক্ষতিগ্রস্থের সংখ্যা এখন হাজারো ছাড়িয়েছে। অব্যাহত নদীর ভাঙ্গনে কেউ হারিয়েছেন ঘরবাড়ি কেউবা ফসলী জমি।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষা এলেই রহমতখালি নদীর ভাঙন দেখা দেয়। চলমান বর্ষায় সদরের টুমচর ইউনিয়নের কালিরচর ও জগৎবেড়, দক্ষিণ চর রমনী, ভবানীগঞ্জ, শাকচর ও লাহারকান্দি এলাকায় সবচাইতে বেশী ভাঙন দেখা দিয়েছে।
সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ্ উদ্দিন টিপু বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। বর্তমানে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার পরিবার ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে। হাজারো পরিবার ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এসব মানুষকে রক্ষায় সরকার দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে জোর দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মূসা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রহমতখালি নদীর ভাঙন ঠেকাতে তিনটি পয়েন্টকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব পয়েন্টে ২৫০০ মিটার নদী তীর রক্ষা বাঁধের জন্য মোট ২৯ কোটি ৪৮ লাখ টাকা বরাদ্ধ অনুমোদন হয়েছে। টেন্ডারে কাজ পাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু করার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এ কর্মকর্তা।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল