১৮ অক্টোবর, ২০১৯ ১৪:০৯
দত্তক নেওয়ার জন্য অনেকের ইচ্ছা প্রকাশ

১ মাসের শিশুকে ফেলে পালিয়ে গেলেন মা

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

১ মাসের শিশুকে ফেলে পালিয়ে গেলেন মা

জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিনের কোলে সেই শিশুটি

কান্নার শব্দ শুনে দরজা খুলতেই বাড়ির মালিক তানিয়া দেখতে পান মাটিতে পড়ে থাকা একটি শিশু চিৎকার করে কান্না করছে। তখন বাজে রাত ৮ টা। অচেনা শিশুটিকে দেখে চিৎকার দিয়ে ওঠেন তানিয়া। এসময় আশপাশের আরও কয়েকজন নারী ছুটে আসেন। তারা ফুটফুটে শিশুটিকে কোলে তুলে নেন। মুহুর্তেই লোকজন ছুটে আসে। পরে তানিয়ার স্বামী অশোক চন্দ্র পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। 

বৃহস্পতিবার রাতে শিশুটির মা শিশুটিকে ওই বাড়ির মূল ফটকের সামনে মাটিতে ফেলে রেখে চলে যায় বলে অনুমান করছে স্থানীয়রা। শিশুটির বয়স ১ মাস।

পুলিশ জানায়, এই শিশুটির মা রিমু আক্তার। তার স্বামীর বাড়ি দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর এলাকায়। ওই নারীর বাবার বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার ভিতরগড় এবং নানার বাড়ি পঞ্চগড় জেলা শহরের কামাত পাড়া এলাকায়। তিনি এই এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকলেও হঠাৎ অন্যত্র চলে যান। দেড় বছর পর তার শিশু সন্তানকে নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার নানা বাড়ি এলাকায় আসে। সন্ধ্যার পরে ওই এলাকার পেয়ারা মজুমদার নামে এক গৃহবধূকে তার কন্যা সন্তানটিকে রাখতে বলেন। 

পেয়ারা মজুমদার জানান, রিমু তার ওই শিশু সন্তানকে আমাকে দিয়ে দিতে চায়। কিন্তু তিনি বিরক্তি প্রকাশ করে তাকে পরে আসতে বলেন। এর পর পরই শিশুটিকে তানিয়ার বাড়ির সামনে ফেলে রেখে চলে যায় সে। শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হলে দত্তক নেয়ার জন্য হাসপাতালে ভিড় জমে ওঠে। এসময় শিশুটিকে এক পলক দেখার জন্য অনেক লোকজন ছুটে আসে। অনেকেই শিশুটিকে দত্তক নেয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। দত্তক নেয়ার আগ্রহীরা শিশুটিকে যত্ন সহকারে লালন পালন করবেন বলে জানান।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সিরাজদৌল্লা পলিন জানান, শিশুটি সুস্থ আছে। শিশুটিকে শিশু ওয়ার্ডে নিবির পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। 

পরে জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী শিশুটিকে দেখতে আসেন। জেলা প্রশাসক শিশুটিকে কোলে নিয়ে আদর করেন।

 এসময় জেলা প্রশাসক জানান দত্তক নেয়ার জন্য অনেকেই ইচ্ছা প্রকাশ করছেন। কিন্তু আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দত্তক নিতে হবে। তিনি শিশুটির সকল প্রকার দায়িত্ব নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এদিকে শিশুটির মা ও বাবাকে খুঁজছে পুলিশ। 

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর