১৮ অক্টোবর, ২০১৯ ১৬:৩৭

শরীয়তপুরে অবাধেই চলছে ইলিশ নিধন ও বেচাকেনা

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

শরীয়তপুরে অবাধেই চলছে ইলিশ নিধন ও বেচাকেনা

ছবি : শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কাজিয়ারচর এলাকার পদ্মা নদীর পার থেকে শুক্রবার সকালে তোলা।

শরীয়তপুরে অবাধে চলছে মা ইলিশ নিধন। প্রতিদিনই জেলেরা জাল ফেলছে নদীতে। ইলিশ নিধন ও বিক্রি যেন এখন মেলায় পরিণত হয়েছে পদ্মার পারে। পদ্মা নদীর পারে দুর্গম এলাকায় শতাধিক স্থানে মাছ বেচাকেনা হচ্ছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিদিনই অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে। কম বেশি প্রতিদিনই আটক করা হচ্ছে জেলে নৌকা ও মাছ। চলছে জেল জরিমানাও। তারপরেও পদ্মা নদীতে অব্যাহতভাবে ইলিশ শিকার করছেন জেলেরা। 

জেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রজনন মৌসুম হিসেবে ১৮ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ শিকার, পরিবহন, ক্রয় বিক্রয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। এই সময়ে মাছ ধরা বন্ধ রাখতে সরকারি খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে জেলেদের। তারপরেও থেমে নেই জেলেদের মাছ ধরা। একদিক দিয়ে প্রশাসনের লোকেরা অভিযান চালাচ্ছে তো অন্য দিক দিয়ে জাল ফেলছে জেলেরা। শরীয়তপুরের গোসাইর হাট থেকে জাজিরা পর্যন্ত এভাবেই পদ্মা নদীতে দিন রাত মাছ শিকার করছে জেলেরা। শত শত নৌকা ও ট্রলার দিয়ে নদীতে মাছ শিকার জেন এখন উৎসবে পরিণত হয়েছে।

জেলেদের ধরা মাছ বিক্রি হচ্ছে পদ্মার পারে দুর্গম এলাকায়। কম দামে ইলিশ মাছ কিনতে জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্রেতারা এসে ভিড় জমাচ্ছে। প্রশাসনের নজর এড়াতে অভিনব কায়দায় (ট্রাভেল ব্যাগ) ব্যবহারের কাপর আনা নেওয়ার কাজে ব্যাবহৃত ব্যাগে করে ইলিশ মাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছে ক্রেতারা। মাত্র এক হাজার টাকায় মিলছে এক হালি (চারটা) ইলিশ। যা কয়েকদিন পরেই বাজারে বিক্রি হবে তিন থেকে চার হাজার টাকায়।

কাজিয়ার চর গ্রামের ছাত্তার মাদবর বলেন, প্রশাসনের লোকজনের চোখ আড়ালে থেকে মাছ শিকার করতে হয়। পুলিশ প্রশাসনের লোকজন আসতে দেখলে অনেক সময় জাল ছেড়ে দিয়ে জেলেরা চলে আসে। আমার একটি নৌকা রয়েছে। ভরা মৌসুমে মাছ ধরতে না পারলে সারা বছরের লোকসান পোশাতে পারবো না। তাই ঝুঁকি নিয়ে মাছ শিকার করছি। পুলিশ আসলে সব লোকজন মাছ ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যায়।

আরেক মাছ ব্যাবসায়ী কামরুজ্জামান হাওলাদার বলেন, পুলিশের নজর এড়িয়ে মাছ বেচা কেনা করতে হয়। পদ্মার পারে এই রকম দুর্গম অঞ্চলে অন্তত শতাধিক স্থানে মাছ বেচা কেনা হচ্ছে। পুলিশ আসলে আমরা পালিয়ে যাই। সরকারের দেওয়া খাদ্য সহায়তা অপ্রতুল হওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকার তাগিদেই মাছ শিকার করছি।

শরীয়তপুরের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ বৈরাগী বলেন, প্রতিদিনই প্রশাসনের পক্ষ থেকে পদ্মা নদীতে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। গত আট দিনে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫ শতাধিক জেলেকে আটক করা হয়েছে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও নগদ অর্থ জরিমানা করা হয়েছে। ইলিশ নিধনের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমরা একদিক দিয়ে অভিযান পরিচালনা করলে অন্যদিক দিয়ে জেলেরা নেমে যাচ্ছে।

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর