৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১১:০৫

আখাউড়া মুক্ত দিবস আজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

আখাউড়া মুক্ত দিবস আজ

৫ ডিসেম্বর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে হানাদার বাহিনী তাদের সহযোদ্ধাদের হারিয়ে বাঁচার জন্যে দিশেহারা হয়ে দিকবেদিক পালাতে শুরু করে। এতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা সর্বপ্রথম মুক্ত হওয়ার পর একে একে পুরো জেলা মুক্ত হতে থাকে। পাকিস্তানি বাহিনী পালানোর সময় তাদের দোসর রাজাকার বাহিনীও পালাতে শুরু করে তখন ব্রাশ ফায়ারে নিহতদের লাশ খালে বিলে পথে প্রান্তরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। 

স্মৃতিচারণে এসব কথা বলছিলেন আখাউড়ার একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি বলেন, অত্র জেলার মধ্যে আখাউড়া উপজেলা আগরতলার সাথে হওয়ায় এই এলাকায়  মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে অপেক্ষাকৃত বেশি, পাকিস্তানি আর্মিরা হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও পোড়াও লুটতরাজে লিপ্ত ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ভেঙ্গে দেওয়ার জন্যে। ভারতের আগরতলা থেকে মিত্র বাহিনী ৬ ডিসেম্বর থেকে সরাসরি কোনো বাধা ছাড়াই আখাউড়া দিয়ে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সম্মিলিত আক্রমণে অল্প দিনেই কুখ্যাত নরখাদক হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর সব স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়া হলে প্রাণ বাঁচাতে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। 

নভেম্বর মাসে কৌশলে টানমান্দাইল গ্রামের ৩৩ জনকে ধরে এনে গঙ্গাসাগর দীঘির পশ্চিম পাড়ে তাদেরকে বলা হয় গর্ত করতে। এই হত্যায় জড়িত ছিলেন সদ্য সমাপ্ত বিচারে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত রাজাকার দরুইন গ্রামের মোবারক হোসেন ওরফে দুম্বা হাজি। গর্ত করার পর সবাইকে গর্তে ফেলে গুলি করে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে মৃত অর্ধমৃত একসাথে মাটিচাপা দিয়ে হত্যা করে। 

শিশু মুক্তিযোদ্ধা বীর প্রতীক আবু সালেক মিয়ার বাড়ি মনিয়ন্দ ইউপির টানমান্দাইল হাশেমপুর গ্রামে। এখানে তখন সালেক মিয়ার পিতাকেও হত্যা করা হয়। সালেক মিয়া তখন পিতৃ হত্যার প্রতিশোধ নিতে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে ত্রিপুরায় চলে যান প্রশিক্ষণ নিতে। তখন প্রশিক্ষক বললেন, সালেক তুমি ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ো। তোমাকে আমরা নিবো না। তখন সালেক মিয়া কান্না শুরু করে দিলে প্রশিক্ষকের মন গলে যায় তারপর তাকে প্রশিক্ষণ দেন। সালেক মিয়া অনেক সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে তিনি সেনাবাহিনীতে চাকরি করে বর্তমানে অবসরে আছেন।

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর