বরিশালে পাইকরী বাজারে পিয়াজের কেজি দেড়শ’ টাকা ছুই ছুই। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা। সাম্প্রতিক বৃষ্টির কারণে পিয়াজের দাম কিছুটা বাড়লেও মৌসুম শুরু হওয়ায় শিগগিরই দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা। এদিকে পাইকারি ও খুচরা বাজারে পিয়াজের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি থাকায় আবারও দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিসিবি’র পিয়াজ কিনছেন ক্রেতারা।
পিয়াজ নিয়ে হুলুস্থুল কাণ্ডের সময় বরিশালের বাজারে পিয়াজের দাম কেজিপ্রতি আড়াইশ’ টাকা ছাড়িয়েছিলো। বিভিন্ন দেশ থেকে সরকারের পিয়াজ আমদানী এবং দেশীয় নতুন পিয়াজ বাজারে আসতে শুরু করায় দাম নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু জানুয়ারীর শুরুর দিকে পিয়াজের বাজার আবার অস্থির হয়ে ওঠে।
সোমবার বরিশালে পিয়াজের পাইকরী বাজার পিয়াজ পট্টিতে মিয়ানমারের পিয়াজ কেজিপ্রতি ১১০ থেকে ১২০ টাকায় এবং তুরস্ক ও পাকিস্তানী পিয়াজ প্রতিকেজি বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১৬০ টাকায়। যা খুঁচরা বাজারে কেজিপ্রতি আরও ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হয়েছে।
পিয়াজের মৌসুম শুরুর পরও পিয়াজের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণ হিসেবে বরিশাল পিয়াজ আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন বলেন, দেশে উৎপাদিত পিয়াজে চাহিদা পূরণ হয় না। দেশে উৎপাদিত পিয়াজের পাশাপাশি আগে ভারতীয় পিয়াজ দিয়ে দেশের চাহিদা পূরণ হতো। কিন্তু ভারত পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় দেশে পিয়াজের সংকট দেখা দিয়েছে। মিয়ানমার, তুরস্ক ও পাকিস্তান থেকে আমদানী করা পিয়াজও চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট নয়। তাই পিয়াজের বাজারে সংকট রয়েছে। মৌসুমের শুরুর দিকে বাজারে কিছু দেশীয় পিয়াজ আসলেও সম্প্রতি বৃষ্টির কারণে সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে। এ কারণে গত কয়েক দিন পিয়াজের বাজার ঊর্ধ্বমুখি থাকলেও আবার দাম কমছে বলে জানান পিয়াজের পাইকরী ব্যবসায়ী এনায়েত হোসেন।
এদিকে পিয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আসায় টিসিবি’র পিয়াজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলেন ক্রেতারা। ক্রেতা সংকট থাকায় গত প্রায় ১ মাস ধরে টিসিবি’র ডিলারদের পিকাপ বোঝাই পিয়াজ নিয়ে ঝিমাতে দেখা গেছে। আগে যেখানে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ক্রেতাদের পিয়াজ কেনার প্রতিযোগীতা ছিলো, সেখানে ক্রেতা সংকট থাকায় সাম্প্রতিক সময়ে দিন শেষেও পিকাপ বোঝাই পেয়াজ নিয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে অনেক ডিলারকে। তবে পেয়াজের দাম আবারও বাড়তে থাকায় লাইনে দাঁড়িয়ে টিসিবি’র পিয়াজ কিনতে দেখা গেছে ভোক্তাদের।
সোমবারও নগরীর নগরভবনের সামনে, সিএন্ডবি রোড চৌমাথা, জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বর, বটতলা মোড়সহ ৭টি স্থানে ট্রাকে করে ডিলারদের মাধ্যমে পিয়াজ বিক্রি করেছে টিসিবি। ৭ জন ডিলার ৭ স্থানে ৭ টন পিয়াজ বিক্রি করেছে। ক্রেতা প্রতি সর্বোচ্চ ২ কেজি করে কিনতে পেরেছেন ৩৫ টাকা কেজি দরে। তবে ক্রেতার তুলনায় পিয়াজের সরবরাহ কম বলে জানিয়েছেন টিসিবি’র ডিলার মো. লাল মিয়া।
টিসিবি বরিশালের অফিস প্রধান মো. আনিচুর রহমান জানান, প্রতি ডিলারকে প্রতিদিন ১ টন করে পিয়াজ সরবরাহ করা হচ্ছে। গোডাউনে যতক্ষণ থাকবে ততক্ষণ ডিলারদের মাধ্যমে ক্রেতাদের কাছে সরকার নির্ধারিত মূল্যে পিয়াজ বিক্রি করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল