পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ড্রেজার ডন খ্যাত শেখ ফরিদকে (৩৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ফরিদ ড্রেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন চক্রের গড ফাদার হিসেবে পরিচিত। বৃহস্পতিবার বিকেলে তেঁতুলিয়া উপজেলা শালবাহান ইউনিয়নের মাঝিপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গত ২৬ জানুয়ারি তেঁতুলিয়ার ভজনপুর এলাকায় পুলিশের উপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুরের মামলায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ দশের অধিক অবৈধ বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন সংশ্লিষ্ট মামলা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, তেঁতুলিয়া উপজেলার শালাবাহান ইউনিয়নের পেদিয়াগছ এলাকার চাঁন মিয়ার ছেলে শেখফরিদ পাথর শ্রমিক ছিলেন। পরে পাথর উত্তোলনকারী চক্রের ডন হয়ে উঠে সে। প্রশাসনের অসাধু কিছু কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতাদের ম্যানেজ করে পাথর শ্রমিক ফরিদ এখন প্রায় ৫০ কোটি টাকার মালিক। তার ২০ একর জমির চা বাগান ও ৩ টি ট্রাকসহ কোটি টাকার পাথরের ব্যবসা রয়েছে। সম্প্রতি ওই এলাকায় একটি চা কারখানা স্থাপনের কাজ শুরু করেছেন। মাঝিপাড়া ও শালবাহানের বিভিন্ন এলাকায় চলা বোমা মেশিন নিয়ন্ত্রণ করতো এই ফরিদ। মাঝিপড়া এলাকার ডাহুক ব্রিজের পাশে বনবিভাগের জমি অবৈধভাবে দখল করে দিন দুপুরে চালিয়ে যাচ্ছেন তার পাথর ব্যবসা। গত বছরের জুলাইয়ে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার হিসেবে মোহাম্মদ ইউসুফ আলী যোগদান করার পর বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলনসহ মাটি খনন করে সব ধরণের পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। তারপরও ওই চক্রটি পাথর উত্তোলনের পায়তারা করছিল।
গত ২৬ জানুয়ারি সকালে ড্রেজারের হোতারা সাধারণ শ্রমিকদের উস্কানি দিয়ে সড়ক অবরোধের ডাক দেয়। এ সময় পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে জুমারউদ্দিন নামে এক শ্রমিক নিহত হন। আহত হয় পুলিশ ও র্যাবসহ ৩০ জন। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই তেঁতুলিয়া থানা পুলিশ দুটি মামলা করেন। দুটি মামলাতেই অজ্ঞাতনামা চার পাঁচহাজার মানুষকে আসামি করা হয়েছে। তেঁতুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক লুৎফর রহমান হত্যা মামলা ও উপ-পরিদর্শক শাহাদাত হোসেন সরকারি কাজে বাঁধা দান, পুলিশ-র্যাবের উপর হামলা ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের মামলাটি করেন। সরকারি কাজে বাঁধা দান ও পুলিশের উপর হামলার মামলায় ৭৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনমিা আরও চার পাঁচ হাজার জনের নামে মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে বোমা মেশিন চক্রের মূল হোতা শেখ ফরিদকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও তেঁতুলিয়া থানার ওসি (তদন্ত) আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, ২৬ জানুয়ারি ভজনপুরে সরকারি কাজে বাঁধা দান, পুলিশ ও র্যাবের উপর হামলা এবং ভাঙচুরের মামলায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে শেখফরিদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হবে। তার নামে বোমা মেশিনসহ দশের অধিক বিভিন্ন মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ