৬ এপ্রিল, ২০২০ ১২:২৩

বালিয়াকান্দিতে সামাজিক দূরত্ব মেনেই কৃষকের হাট

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

বালিয়াকান্দিতে সামাজিক দূরত্ব মেনেই কৃষকের হাট

দেশের মোট চাহিদার প্রায় ১৩ শতাংশ পিয়াজের চাহিদা পূরণ করে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন রাজবাড়ী জেলার পিয়াজ চাষীরা। পদ্মা পাড়ের পাঁচ উপজেলায় ব্যাপক পিয়াজ চাষ কলেও বালিয়াকান্দিতে ১৬ হাজার হেক্টর জমির ১০ হাজার হেক্টর জমিতে পিয়াজ  চাষ হয়। 

করোনাভাইরাসের কারণে বালিয়াকান্দি উপজেলার ১৮টি হাট বন্ধ হবার কারণে বিপাকে পড়েছিলেন এ উপজেলার কৃষকেরা। কৃষিপণ্য বিক্রি করতে না পারায় মানবেতন জীবন অতিক্রম করছিলেন তারা। অর্থ সংকটে বন্ধ হবার পথে উপক্রম হয়েছিল পরবর্তী ফসল পাট চাষ। 

এমন সময় বিষয়টি চিন্তা করে বালিয়াকান্দি উপজেলার শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে সামাজিক দূরত্ব বাজায় রেখে কৃষিপণ্যের হাট বসার অনুমতি দেন বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম হেদায়তুল ইসলাম।

ব্যক্তিক্রমী এই হাটে ক্রয়-বিক্রয় করতে পেরে খুশি উপজেলার কৃষকেরা। এমন কাজে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা।

জানা যায়, ৫ এপ্রিল (রবিবার) বালিয়াকান্দি শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে বালিয়াকান্দি উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রথম হাট বসে। বালিয়াকান্দি থানা পুলিশ ও বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়ন পরিষদ ও বালিয়াকান্দি স্কাউটস ও বালিয়াকান্দি বাজার বণিক সমিতির সহযোগিতায় কৃষকের জন্য এ হাটে পিয়াজের জন্য পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের জন্য আলাদা আলাদা স্থান সৃষ্টি করা হয়। চক পাউডার দিয়ে খুচরা বিক্রেতাদের জন্য ৬ ফুট দূরত্ব বাজায় রেখে ৮বর্গফুট এবং পাইকারি বিক্রেতাদের জন্য ১২ ফুট দূরে দূরে ২০ বর্গফুট করে ঘর কাটা হয়। ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য অস্থায়ী ছাতার ব্যবস্থা করা হয়। স্টেডিয়ামের প্যাভেলিয়নের দ্বিতীয় তলায় কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়।

একাধিক কৃষক জানান, আমরা এই সময়ে প্রতি হাটে পিয়াজ বিক্রি করে হাট-বাজার করে সংসার চালাই এবং অন্য ফসল উৎপাদনের জন্য বীজ, সার ক্রয় করি। করোনাভাইরাসের কারণে হাট বন্ধ থাকায় আমরা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিলাম। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যার ঘর করে করে হাট বসানোয় আমরা হাটে এসেছি এবং আমাদের পিয়াজ বিক্রি করতে পারলাম। এমন হাটের জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই।

এ ব্যাপারে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, বালিয়াকান্দি মূলত একটি কৃষি প্রধান উপজেলা। এই উপজেলার কৃষকেরা এই সময়ে পিয়াজ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন এবং অন্য ফসল ফলান। করোনাভাইরাসের কারণে সব হাট বন্ধ রয়েছে। ফলে কৃষকদের জীবন নির্বাহ এবং অন্য ফসল উৎপাদন যেন ব্যহত না হয় সেই চিন্তা থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এই হাট সৃষ্টি করেছি। প্রথম দিনে সফলতা পেয়েছি। প্রতি রবিবার এবং বৃহস্পতিবার উপজেলায় কৃষকদের জন্য এই হাট বসবে বলে জানান তিনি। 

সোমাবার এমন হাট প্রসঙ্গে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, কৃষকদের কথা চিন্তা করে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যে হাট বসিয়েছেন সেটা ইতোমধ্যেই প্রসংশা কুড়িয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে রাজবাড়ীতে সাপ্তাহিক সবগুলো হাট বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে যে উপজেলায় পিয়াজ বেশি বিশেষ করে কালুখালীতে এমন একটি হাট বালিয়াকান্দির মডেল অনুসরণ করে করার চিন্তাভাবনা জেলা প্রশাসনের রয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর