করোনাভাইরাস মোকাবিলায় লালমনিরহাটে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও বিদেশফেরত লোকজনদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে তাদের বাড়ি বাড়ি লাল নিশানা টানানো হয়েছে। শুধু তাই নয় অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইরে ঘোরাফেরা বন্ধ করতে জেলা প্রসাসন, উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ প্রসাশন ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন।
করোনা মোকাবিলায় ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। বেলা ১টার পর থেকে হাটবাজার, দোকানপাঠ বন্ধ রাখা হয়েছে। যানবাহনসহ সবকিছু লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়মিত মনিটরিং করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছেন।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী জেলার পাঁচ উপজেলায় জনসচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে, যাতে সবাই বাড়িতে থাকে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিয়মিত হাত ধোঁয়ার কাজ করেন।
তিনি আরও বলেন, করোনা মোকাবিলায় পবিত্র মাহে রমজান মাসে যেন সাধারণ মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয়-বিক্রয় করতে পারে, সে জন্য স্কুল-কলেজের মাঠগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বেলা ১টা পর্যন্ত বাজার বসানো হয়েছে। জেলায় ৩৬ জন টিসিবি ডিলারের মাধ্যমে তেল, ডাল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সাধারণ মানুষ সাশ্রয়ী দামে পেতে পারে, তা নিশ্চিত করা হয়েছে। শুরু থেকেই জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
সরকার ঘোষিত প্রণোদনায় কৃষি পুনর্বাসনে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। কৃষকরা যাতে তাদের উৎপাদন অব্যাহত রাখতে পারেন, সে লক্ষ্যেই এটা করা হবে। প্রণোদনা থেকে কৃষকদের সহায়তা চালিয়ে যাওয়া হবে। এ ছাড়া নিম্নআয়ের মানুষ, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, হোটেল শ্রমিক, রিকশা ও ভ্যানচালকসহ করোনায় বেকার হয়ে পড়া মানুষদের সহায়তা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
লালমনিরহাট জেলা সিভিল সার্জন নির্মলেন্দু রায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, জেলায় এখন পর্যন্ত মাত্র ৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। চিকিৎসার জন্য ৫০টি বেড, ৪০ ডাক্তার ও ৬০ নার্সকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ভীত না হয়ে সচেতন হোন, নিজেদের রক্ষার্থে ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হবেন না।
এদিকে ২৪ এপ্রিল জেলায় ৯১ হাজার ২৮১ টন জিআর চাল ও ৪৩ লাখ ১৪ হাজার ৮৯৫ টাকা নগদ বিতরণ করা হয়েছে। ৯১ হাজার ৮৮১ পরিবারকে বিশেষ ও ১ লাখ ১৭ হাজার ৬৮১ পরিবারকে ওএমএস সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ১২ লাখ ৯৭ হাজার ৬০৫ টাকার শিশুখাদ্য বিতরণ হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম