গাজীপুরের কাপাসিয়ার রায়েদ বাজারে খাবার হোটেলে ইফতার বিক্রিতে বাধা দেয়ার ঘটনায় পুলিশ ও এলাকাবাসীর মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় পুলিশ ইফতার বিক্রিতে বাধা ও ইফতার সামগ্রী ফেলে দিয়ে লাঠিপেটা করে হোটেলের কয়েকটি গ্লাস ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এ ঘটনায় কাপাসিয়া থানার ৫ পুলিশসহ ১০ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে থানায় ৮ জনের নামে মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনায় সাবেক ইউপি মেম্বার বাদল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এলাকায় ব্যাপক থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি ঠিক রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ইফতারের আগ মুহূর্তে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাপাসিয়ার রায়েদ বাজারে আক্তার হোসেন নামের এক খাবার হোটেল ব্যবসায়ী ইফতার বিক্রি করার সময় উপজেলার সিংহশ্রী পুলিশ ক্যাম্পের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সেকান্দার আলী ইফতার বিক্রিতে বাধা দেয়। এ সময় লকডাউন না মেনে দোকান খোলা রাখায় এএসআই সেকান্দার হোটেলে থাকা ইফতারের খাবার সামগ্রী ফেলে দেয় এবং লাঠিপেটা করে হোটেলের কয়েকটি গ্লাস ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে। পুলিশের লাঠির আঘাতে দোকান মালিক আকতার হোসেন, ক্রেতা নূরুল হক, আফাজ উদ্দিন ও মোবারক হোসেন আহত হয়। এ খবর বাজার ও আশপাশে ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী ছুটে আসে। এসময় এলাকাবাসী পুলিশদের অবরুদ্ধ করে রাখে। এক পর্যায়ে পুলিশ চড়াও হয়ে ধাওয়া দেয়। এতে পুলিশ ও এলাকাবাসীর মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় সিংহশ্রী ক্যাম্পের এএসআই সেকান্দার আলী, হাবিলদার কায়েসসহ ৫ জন পুলিশ আহত এবং হোটেল মালিক আক্তার হোসেনসহ অন্তত ৫ জন এলাকাবাসী আহত হয়েছেন।
এ ব্যাপারে সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সেকান্দার আলী জানান, লকডাউনে দোকানপাট খোলা রাখার বিষয়ে বাজারে প্রবেশ করলে হোটেলের লোকজনের দৌঁড়াদৌঁড়িতে ইফতারের খাবার ও দোকানের গ্লাস পড়ে যায়। তিনি কোনো কিছু ফেলেননি। খাবার ফেলে দেয়ায় স্থানীয় লোকজন পুলিশকে সন্দেহ করে ধাওয়া করলে একজন এএসআই ও দু’জন কনস্টেবল আহত হন। তাদেরকে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ তার দায়িত্ব পালন করার সময় রায়েদ বাজার এলাকার কিছু উশৃঙ্খল এলাকাবাসী পুলিশের উপর হামলা চালায়। এ ঘটনার সাথে জড়িত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে বাজার ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে জানান, গত ৩০ এপ্রিল ওই এএসআই সেকান্দর আলী পাশের বাগেরহাট এলাকার সুলতান উদ্দিনের আখের মিলে গিয়ে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেয়ায় আখ জাল দেয়ার চুলা ভেঙে ফেলে। ওই সময় বাধা দিতে গেলে দারোগার লাঠির আঘাতে মোজাম্মেল ও মানিক নামে দু’জন আহত হয়। তারা এখনো স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক