দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আম্ফান বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে এই আশংকায় ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেরায় বাগেরহাটের জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। করোনার কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে জেলার ৩৪৫টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রের পাশাপাশি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবহার উপযোগী পাকা ভবনগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। একই সাথ জেলা উপজেলায় খোলা হয়েছে কন্টোল রুম। প্রস্তুত রাখা হয়েছে মেডিকেল টিম, শুকনা খাবারও পানি।
লোকজনকে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান সর্ম্পকে সচেতন করতে মাঠে নেমেছে যুব রেডক্রিসেন্ট-সিপিপিসহ স্বেচ্চাসেবকরা। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষও ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। বর্তমানে মোংলা বন্দরের আউটার এ্যংকরেজে অবস্থানরত ৭টি জাহাজে পন্য ওঠানামার কাজ চললেও ঝড়ো হাওয়া শুরু হলে বন্দরের পন্য খালাস বন্ধ করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে বন্দরের হারবার বিভাগ।
ঘূর্ণিঝড় পরবর্তি উদ্ধার তৎপরতা চালাতে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ডের পাশাপাশি যুব রেডক্রিসেন্ট-সিপিপিসহ স্বেচ্চাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই জেলায় ২৬০০ মিটার ঝঁকিপূর্ণ বেড়িবাধ সংস্কার করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের জলোচ্ছাসে কোন বেড়িবাধ ক্ষতিপ্রস্ত হলে তা দ্রুত মেরামতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে তাদের।
ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে রবিবার সকাল থেকে বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। সমুদ্রে আছড়ে পড়ছে বিশাল-বিশাল ঢেউ। সাগর ও উপকূলে বইতে শুরু করেছে ঘূর্ণি বাতাস। সাগর উত্তাল ও ঘূর্ণি বাতাস বইতে থাকায় গভীর সমুদ্র থেকে বাগেরহাটের মৎস্য বন্দরগুলোতে ফিরে আসছে মাছ ধরা ট্রলার। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ধেঁয়ে আসার খবরে রবিবার সকালে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করেছে। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে ক্ষয়খতি যাতে কম হয় সেজন্য আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ জানান, এবার করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাওয়ায় জেলার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আগের মতো লোক গাদাগাদি করে রাখা যাবে না। সবাইকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে রাখতে হবে। সেজন্য ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রেগুলোর পাশাপাশি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাকা ভবনগুলো এবার আশ্রয় কেন্দ্রে হিসেবে ব্যবহার করা হবে। রবিবার সকালে জেলা দূর্যোগ ব্যবস্তাপনা কমিটির জরুরী সভা করে এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে জেলার সব উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রেড ক্রিসেন্টসহ সকল স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল