গাজীপুরে কাভার্ডভ্যান ভর্তি সুতা লুট করতে চালক মুন্নাফ সরকারকে (৫০) গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র, হত্যার পর লুট করে নিয়ে যাওয়া কাভার্ডভ্যান এবং ১২২ বস্তা সুতা উদ্ধার করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত নাজমুল হোসেন (২২) ও গকুল চন্দ্র সরকার ওরফে বকুল সরকার (৩০) নামে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার দুপুরে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের (জিএমপি) সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান, জিএমপি উপ-কমিশনার (ক্রাইম ও মিডিয়া) জাকির হাসান। প্রেস ব্রিফিংকালে জিএমপির সহকারী পুলিশ কমিশনার থোয়াইঅংপ্রু মারমা, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: রফিকুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সৈয়দ রাফিউল করিম, পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশনস) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জিএমপি উপ-কমিশনার জাকির হাসান জানান, ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের নান্নু স্পিনিং মিলস থেকে একটি কভার্ডভ্যান ভর্তি করে ১২২ বস্তা সুতা নিয়ে চালক মুন্নাফ সরকার গাজীপুরের কালিয়াকৈরের চন্দ্রার চৌরাস্তার একটি কারখানার উদ্দেশ্যে বের হয়। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোগড়া এলাকা থেকে পূর্ব পরিচিত চালক নাজমুল হোসেন ও তার সহযোগীরা কাভার্ডভানে উঠেন। এক পর্যায়ে চালক মুন্নাফকে কাভার্ডভ্যানের ভেতরেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। পর হত্যাকারীরা নিহতের লাশটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ৫নং গেট এলাকায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে তারা সুতা ভর্তি কাভার্ডভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যান।
তিনি জানান, গত ১১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানার পুলিশ সদস্যরা ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ৫নং গেট সংলগ্ন এলাকা থেকে একটি অজ্ঞাত পুরুষের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠায়। পরে নিহতের স্ত্রী সাহেদা বেগম খবর পেয়ে লাশটি তার স্বামী কাভার্ড ভ্যান চালক মুন্নাফ সরকার (৫০) বলে শনাক্ত করেন। পরে নিহতের স্ত্রী সাহেদা বেগম বাদী হয়ে জিএমপি সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকৃত কভার্ডভ্যান গত গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে সাভারের ধামরাই এলাকা থেকে মালামাল উদ্ধার করে। পরে ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে আসামি গকুল চন্দ্র সরকারকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার হেফাজত থেকে লুন্ঠিত সুতা উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত সুলতার মূল্য ১৩ লাখ ৬৬ হাজার ৮০০ টাকা। গ্রেফতারকৃত গকুলের দেওয়া তথ্যমতে ১২ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত দেড়টার দিকে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত মূল আসামি নাজমুল হোসেন হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়।
নিহত মুন্নাফ সরকার বর্তমানে তারা গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর তেতুইবাড়ি মোজার মিল এলাকার বাসিন্দা হলেও তাদের বাড়ি কুমিল্লার হোমনা থানার হরিপুর গ্রামে।
প্রাথমিকভাবে গ্রেফতারকৃতরা ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি পুলিশের কাছে স্বাকীর করেছে বলে জানিয়েছেন, জিএমপি উপ-কমিশনার জাকির হাসান। গ্রেফতারকৃতদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ গাজীপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন