১৯ জুন, ২০২১ ২১:০১

ছাত্রলীগ-ছাত্রদল দুই কূলই হারালেন সেই বিতর্কিত নেতা রনি

কামরুজ্জামান সোহেল, ফরিদপুর

ছাত্রলীগ-ছাত্রদল দুই কূলই হারালেন সেই বিতর্কিত নেতা রনি

রায়হান রনি

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক রায়হান রনিকে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক করার ঘটনা নিয়ে বেশ তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মাঝে বেশ ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। 

একই ব্যক্তি ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হওয়ায় বিব্রত ছাত্রদল-ছাত্রলীগের নেতারা। রায়হান রনির এ ধরনের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড করায় তাকে দল থেকে অব্যাহতি দিয়েছে জেলা ছাত্রলীগ। আর ছাত্রদলের নেতারা জানিয়েছেন, জরুরি সভা করে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

জানা গেছে, সদ্য ঘোষিত ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা পৌর ছাত্রলীগের কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ দেওয়া হয় রায়হান রনিকে। অভিযুক্ত রায়হান রনি আগে থেকেই পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক পদে ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয়। 

ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ নেতারা রায়হান রনিকে তাদের দলের নেতা হিসেবে মনে করেন বলে জানান। তবে জেলার দুই দলের শীর্ষ নেতারা জানান, তারা তদন্ত করে বিষয়টি দেখছেন। একই ব্যক্তি ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়ায় খোদ আওয়ামী লীগ-বিএনপি নেতাদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

রায়হান রনি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার পৌরসভার বাসিন্দা। সে যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পড়ালেখা করে। 

স্থানীয়রা জানান, ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের পদ পাওয়া রায়হান রনি একই ব্যক্তি। দীর্ঘদিন ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। ছাত্রলীগের নেতাদের অন্ধকারে রেখে সে ছাত্রলীগের বড় একটি পদ বাগিয়ে নিতে সক্ষম হয়। তার এ পদের পেছনে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতার হাত রয়েছে। 

ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজীদুল রশীদ চৌধুরী রিয়ান জানান, রায়হান রনিকে নিয়ে প্রশ্ন উঠায় আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করি। তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে অভিযোগের সত্যতা পাই। ফলে শনিবার জরুরি সভা করে পৌর ছাত্রলীগের পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কারো ব্যক্তিগত কারণে সংগঠনের বদনাম হোক সেটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। 

এদিকে, ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হাসান কায়েস বলেন, রায়হান রনি ছাত্রলীগের পদ নিয়েছেন এমন অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। এ অভিযোগের ভিক্তিতে শনিবার জরুরি সভা করে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

অভিযুক্ত রায়হান রনি জানান, তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। সে কোনো দিনই ছাত্রদলের সাথে ছিলেন না। 

ছাত্রদলের রায়হান রনি এবং ছাত্রলীগের রায়হান রনি একই ব্যক্তি কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছাত্রদলের রায়হান রনি নামে কেউ থাকতেই পারে। কিন্তু সেটা আমি নই। 

উল্লেখ্য, প্রায় ৬ মাস আগে গত ২৩ জানুয়ারি জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সৈয়দ আদনান হোসেন অনু ও সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হাসান কায়েস ২১ সদস্য বিশিষ্ট আলফাডাঙ্গা পৌর ছাত্রদলের একটি আহবায়ক কমিটি করেন। সেই কমিটিতে একজন আহবায়ক ও নয়জন যুগ্ম আহবায়ক, একজন সদস্য সচিব এবং বাকিদের সদস্য করা হয়। এ কমিটির ১ নং যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন রায়হান রনি।

অপরদিকে, ১২ জুন আলফাডাঙ্গা পৌর ছাত্রলীগের তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ কমিটিতে রায়হান রনিকে সাংগঠনিক সম্পাদক রাখা হয়।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর