নওগাঁ শহরে প্রায় চারশ বছরের পুরোনো একটি অচিন গাছকে ঘিরে মানুষের নানা কৌতুহল আবহমান কাল ধরেই। কিন্তু এ ব্যাপারে নাম আবিষ্কার কিংবা এর প্রজন্ম বিস্তার কোনটিই আজ পর্যন্ত সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে এলাকার সচেতন মহলের দাবি এই প্রাচীণ গাছটিকে গ্রামীণ ঐতিহ্য হিসেবে বিবেচিত করে সংরক্ষণ করা হোক।
জানা গেছে, নওগাঁ শহরের দক্ষিণ প্রান্তে চকপ্রসাদ মহল্লায় নওগাঁ-শৈলগাছি সড়কের পশ্চিম পার্শ্বে জনশ্রুতি অনুযায়ী প্রায় চারশ বছর ধরে মাথা উচুঁ করে দাঁড়িয়ে আছে অচিন গাছটি। দূর থেকে দেখতে বট গাছের মত হলেও পাতা কিছুটা জাম পাতার মত। চারিদিকে ডালপালা হেলে গিয়ে প্রায় মাটি ছুঁয়ে রয়েছে। গাছের ব্যাসার্ধ অনেক। প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ ফিট। এই গাছটির বৈশিষ্ট হলো পাতা তেমন একটা ঝড়ে পড়ে না। সব সময় সবুজ থাকে। এলাকার সাধারণ মানুষ বংশ পরম্পরায় আবহমানকাল ধরে গাছটির কোন পরিচয় বা নাম খুঁজে পায়নি।
স্থানীয় অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, এলাকার শিক্ষিত সচেতন মানুষের এই অচিন গাছটিকে ঘিরে অনেক কৌতুহল থাকলেও শেষমেষ তা তাদের মনেই রয়ে গেছে। কথিত আছে কোন এক সাধু নাকি পীর পানিতে ভাসতে ভাসতে এই গাছটির চারা সাথে এনে এখানে আস্তানা গেড়েছিলেন। অতি প্রাচীণ ও বৃহৎ এই গাছের নিচে বিশ্বাস থেকে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ এখানে পূজা অর্চনা শুরু করেন। শুধু তাই নয় এ উপলক্ষে মেলাও বসতো সেখানে।
নওগাঁ সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও প্রাণী বিষারদ শরিফুল ইসলাম খান বলেন, গাছটি পাকা রাস্তার সন্নিকটে হলেও নানা প্রতিকূলতার কারণে গাছের গোড়া পর্যন্ত যাওয়ার কোন পথ নাই। গাছটিকে ঘিরে পূজা পার্বণ ও উৎসবের আয়োজন করা হয়। গাছটির পাতাসহ অনেক ডালপালা বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা যারা গাছ নিয়ে কাজ করেন তারা নিয়ে গেছেন। কিন্তু আমরা ফলাফল পাইনি এখন পর্যন্ত। এলাকার কেউ বলতে পারে না গাছটির নাম কি আর বয়স কত। তবে ধারনা করা হয় প্রায় ৪শত বছরের পুরাতন এই অচিন গাছ। এই অতি প্রাচীণ গাছটির পরিচয় নিরুপণ ও বংশ বিস্তার এবং প্রয়োজনী সংরক্ষণের ব্যাপারে দেশের উদ্ভিদ ও প্রাণীবিদদের গবেষণা করা প্রয়োজন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার